শক্তিশালী ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হাইতি নিহত তিন শতাধিক, হয়েছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : ফিরে এল এগারো বছর আগের ভয়াবহ স্মৃতি। এক মারণ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের নিকটবর্তী দেশ হাইতি। রিখটার স্কেলে যার তীব্রতা ৭.২। ভূমিকম্পের পর আরো কয়েকটি মৃদু ভূকম্পনের খবর পাওয়া গিয়েছেI হাইতিতে ৭.২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখনো পর্যন্ত ৩০৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ১৮শ’র মতো মানুষ এতে আহত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।

প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়িস’র হত্যাকাণ্ডের পর মাত্র ৩ সপ্তাহ আগে শপথ নেয়া, দেশটির প্রধানমন্ত্রী আরিয়েল অঁরি ইতিমধ্যেই হাইতিতে মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। তিনি জানান সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ সাহায্য বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে I

তিনি সংবামাধ্যমগুলোতে জানান, “সবচাইতে বড় দায়িত্ব এখন ধ্বংসস্তূপ থেকে যথাসম্ভব বেঁচে থাকা লোকজনদের উদ্ধার করা I আমরা শুনতে পেরেছি যে, স্থানীয়, বিশেষ করে লে কায়েস’র হাসপাতালগুলিতে বিপুল সংখ্যক আহতদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে I’ প্রধানমন্ত্রী আরিয়েল অঁরি মানবিক সহায়তার জন্য দল গঠন করেছেন।

২০১০ সালে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে লাখো মানুষের মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি এখনো পুষিয়ে উঠতে পারেনি দেশটি।
উদ্ধারকারীরা জানাচ্ছেন, ভেঙে পড়া বহু বাড়ির নীচে অনেকে আটকে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁদের চিহ্নিত করে দ্রুত উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাইতির দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল। স্কুল থেকে হাসপাতাল, তছনছ হয়ে গিয়েছে সব কিছুই। কম্পনের উৎসস্থলের খুব কাছাকাছি থাকায় এই অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।

শনিবার সকালবেলা ভারতীয় হিসাবে বিকেল সাড়ে পাঁচটা হাইতি-তে এই ভয়াবহ ভূকম্পন অনূভূত হয়। ৭.২ মাত্রার এই কম্পনে নিমেষে ভেঙে পড়ে সেখানকার একাধিক বাড়ি-ঘর। চোখের সামনে থেকে উধাও হয়ে যায় রাস্তাঘাট।

মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎসস্থল পোর্ত-অউ-প্রিন্সের ১৬০ কিলোমিটার পশ্চিম , কেন্দ্র মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে। তবে শুধু পশ্চিমভাগে নয়, গোটা দেশেই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে হাইতি সরকারের তরফে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বলছে, ওই অঞ্চলে ৫ দশমিক ১ মাত্রার একটি সহ মোট ছয়টি ‘আফটার-শক’ অনুভূত হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হাইতিতে ‘তৎক্ষণাৎ সহায়তা’ অনুমোদন দিয়েছেন। মার্কিন সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি সেখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাচাই, নিখোঁজদের খুঁজে বের করা এবং পুনর্গঠনে সহায়তা করছে।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ভয়াবহ ধ্বংসের চিত্র ফুটে উঠেছে। গোটা বিশ্ব জুড়ে মানুষ পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে সাহায্য প্রেরণ করতে শুরু করেছেন।
হাইতিতে সেভ দা চিলড্রেনের প্রধান লেইলা বুরাহলা বলেছেন, “ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করতে বহু দিন লেগে যাবে। কি ধরনের মানবিক সহায়তা এখানে দরকার হবে তা পরিষ্কার।”