HighlightNewsরাজ্য

১৩ মাসের লড়াই শেষে হাই কোর্টের নির্দেশে সুবিচার পেলেন স্কুল শিক্ষিকা সংযুক্তা

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : দীর্ঘ ১৩ মাসের লড়াই-এর পর অবশেষে হাই কোর্টের নির্দেশে সুবিচার পেলেন স্কুল শিক্ষিকা সংযুক্তা রায়। ১৩ মাসের অপেক্ষার অবসান। বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ওই স্কুলে ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষিকা পদে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিয়োগ করতে হবে সংযুক্তা রায়কে। পাশাপাশি তিনি দীর্ঘ দিন শিক্ষিকা সংযুক্তা রায়কে চাকরিতে যোগ দিতে না দেওয়ার কারণে করোনেশন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং তত্‍কালীন টিচার ইনচার্জকে কড়া ভাষায় ধমক দেন।

জানা যাচ্ছে, উত্তর দিনাজপুরের আদিবাসী জুনিয়র গার্লস স্কুলে চাকরি করতেন রায়গঞ্জের বাসিন্দা সংযুক্তা। ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) করোনেশন স্কুলে ইংরেজি বিষয়ে তাঁর নাম সুপারিশ করে। সেই মতো ওই নিয়োগে অনুমতি দেন জেলা স্কুল পরিদর্শক। কিন্তু টিচার ইনচার্জ স্বপন চক্রবর্তী এবং প্রধান শিক্ষক কালীচরণ সাহা ইতিমধ্যে এক জন শিক্ষিক ওই বিষয়ে কর্মরত আছেন এই যুক্তিতে সংযুক্তার নিয়োগে বাধ সাধেন। যদিও আদালতে এদিন শিক্ষিকার আইনজীবী অঞ্জন ভট্টাচার্য সেই দাবি ভুল প্রমাণিত করেন। তিনি বলেন ওই পদটি শূন্য রয়েছে। আগে যে শিক্ষক কর্মরত ছিলেন তিনি এক জন জেল ফেরত আসামী। নিজের স্ত্রীকে খুন করেন। দেহটি টুকরো টুকরো করে রাস্তায় ছড়িয়ে দেন। ১০ জন চিকিত্‍সক ওই টুকরোগুলির ময়নাতদন্ত করেছিলেন। এই খুনের মামলাটি এখনও হাই কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।

এরপর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ”এটা আসলে পৌরুষত্বের আস্ফালন। এক জন খুনিকে চাকরিতে ফিরিয়ে আনতে উদ্যত প্রধান শিক্ষক এবং টিচার ইনচার্জ! অথচ এক মহিলা চাকরির জন্য রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না।” স্কুলের ওই দুই কর্তার উদ্দেশে বিচারপতি প্রশ্ন, ”জেনে রাখবেন ভারতবর্ষে একটা বিচারব্যবস্থা রয়েছে। কেন এত দিন যোগদান করাননি ওই শিক্ষিকাকে? আপনারা কি জেলা স্কুল পরিদর্শকেরও উপরে? বলার পরও তাঁদের নির্দেশ কেন মানেননি?” এর পর স্বপন ও কালীচরণ ভুল স্বীকার করেন। উত্তরে বলেন, ”বিষয়টি বিচারাধীন ছিল তাই নিয়োগ দেওয়া যায়নি। এখন দিতে কোনও অসুবিধা নেই।” পরিবর্তে বিচারপতি ধমকের সুরে বলেন, ”বাঙালকে হাই কোর্ট দেখাচ্ছেন? এর আগে এই আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, কিন্তু আপনারা তা মানেননি! জানেন এ বার ওই স্কুলে আরও দু’টি পদ খালি হবে। আপনাদের চাকরি কেড়ে নিতে পারি!” পর ক্ষণেই শান্ত ভাবে বিচারপতি বলেন, ”সংযুক্তা ম্যাডাম এত দিন কষ্ট করেছেন আর দু’দিন করুন। মাস্টারমশাইরা… এ বার আপনারা দিয়ে দিন। না হলে ফল ভাল হবে না।”

Related Articles

Back to top button
error: