HighlightNewsআন্তর্জাতিক

দীর্ঘ ২০ বছর পর অবশেষে আফগানিস্তান ছাড়ছে তুর্কি সেনারাও

টিডিএন বাংলা ডেস্কঃ তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গতকাল প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে তুর্কি সৈন্যরা আফগানিস্তানে তাদের প্রতি অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছে। কর্তব্য পালন শেষে তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সৈন্যবাহিনী আফগানিস্তান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মূলত আমেরিকার অনুরোধেই তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ নিয়ে ন‍্যাটোর পাশাপাশি তৎকালীন আফগান সরকার ও তালেবানের সঙ্গে আলোচনা চালায় তুরস্ক। কিন্তু তালেবান প্রথম থেকেই তুরস্কের এই প্রস্তাবকে নাকচ করে আসছে। তারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় তুর্কি সৈন্যরা ন্যাটো বাহিনীরই অংশ, তাই চুক্তি অনুযায়ী তুর্কি সৈন্য বাহিনীকে ৩১ আগস্ট এর মধ্যে আফগানিস্তান ত্যাগ করতে হবে। অবশ্য তুরস্ক বিভিন্ন দেশের কূটনীতিবিদ ও নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফেরানোর জন্য কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। কিন্ত তালেবান অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতার দখল নেওয়ায় সমস্ত রাজনৈতিক পটভূমির পরিবর্তন ঘটে। তাছাড়া অধিকাংশ দেশই আফগানিস্তান থেকে তাদের কূটনীতিবিদ ও নাগরিকদের ইতিমধ্যেই সরিয়ে নিয়েছে। বাকিদেরও ৩১ আগস্ট এর মধ্যেই সরিয়ে নেওয়ার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চলছে। এমতাবস্থায় তালেবানের অনড় অবস্থানের জন্য অবশেষে আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিল তুরস্ক। যদিও তালেবান তুরস্কের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে আগ্ৰহ প্রকাশ করেছে। তারা আফগানিস্তানের পরিকাঠামো উন্নয়ন, বাণিজ্যিক, সামরিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে তুরস্কের সাহায্য চেয়েছে। পাশাপাশি কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা চেয়েছে তুরস্কের কাছে। অবশ্য তুর্কি সৈন্যদের অবর্তমানে তুর্কি টেকনিশিয়ানদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই তুর্কি সৈন্য প্রত্যাহারের পরে সেখানে তুর্কি টেকনিশিয়ানদের রেখে দেওয়া হবে কিনা সে ব্যাপারে এখনও স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি তুরস্ক। আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারকে এরদোগান সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন অনেকেই। যদিও সরকারের যুক্তি হল, বৈদেশিক কূটনীতিবিদ ও নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদান ও নিরাপদে নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে সাহায্য করাই ছিল তুরস্কের মূল লক্ষ্য। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে অধিকাংশ দেশই তাদের অধিকাংশ কূটনীতিকদের সপরিবারে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে। চলছে বিদেশী নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার সর্বোচ্চ প্রক্রিয়া। তাই তুর্কি সেনাদের সেখানে প্রয়োজনীয়তাও এখন আর নেই। তবে আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়ায় তুরস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে আগ্রহী বলে জানিয়েছে তুরস্ক। তবে বর্তমান তালিবান সরকারকে তুরস্ক সমর্থন দেবে কি সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি তুরস্ক।

Related Articles

Back to top button
error: