HighlightNewsদেশ

বাল্য বিবাহের অভিযোগে অসমে আবারও গ্রেফতার কমপক্ষে ১,০৩৯, পরিকল্পিত ভাবে মুসলিমদেরই টার্গেট করা হচ্ছে! চলছে জল্পনা

টিডিএন বাংলা ডেস্ক:  প্রথম দফার পর এবার দ্বিতীয় দফার অভিযান শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় অভিযানে আরও নৃশংস অসমের হিমন্ত সরকার। বাল্য বিবাহের অভিযোগে শুধু মঙ্গলবারই তারা রাজ্যজুড়ে ১,০৩৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। শেষ পাওয়া খবরে এমনটাই জানা গিয়েছে। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই গ্রেফতারির তথ্য প্রকাশ করেছেন। হিমন্ত নিজেও জানিয়েছেন, গ্রেফতারির প্রক্রিয়া যেহেতু জারি রয়েছে, তাই সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে।

যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগই যে মুসলিম তা বলাবাহুল্য। আর এই বিষয়টি নিয়ে সবথেকে বেশি উদ্বেগে বিশিষ্টজনরা। তাদের বক্তব্য, এই গ্রেফতারি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যাদের এখন গ্রেফতার করা হচ্ছে, তারা যখন বিয়ে করেছিল তখন এই আইন ছিল না। এখন পুলিশ বেপরোয়াভাবে স্বামীদের গ্রেফতার করে নিয়ে গেলে তাদের স্ত্রীদের কী হবে? তাদের ভরণপোষণ কীভাবে হবে? স্বামীরাই তো বেশিরভাগ পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী। তারাই গ্রেফতার হয়ে গেলে সেই পরিবারগুলির কী হবে? সরকার এসব ভেবে দেখছে না।

রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য তারা এসব করছে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতেই প্রথম বাল্য বিবাহ বিরোধী অভিযান শুরু হয়েছিল। সেইসময় এক হাজারের বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এভাবে স্বামীদের গ্রেফতার করে নিয়ে গেলে সংসার কীভাবে চলবে সেই অভিযোগে স্ত্রীদের বিক্ষোভেরও সাক্ষী থেকেছিল অসম। জানা গিয়েছে, বাল্যবিবাহ বিরোধী দ্বিতীয় অভিযানটি শুরু হয় মঙ্গলবার ভোর থেকে। একদিনেই হাজারের বেশি লোককে গ্রেফতার করে হিমন্তর পুলিশ।

অসমের বিজেপি সরকার চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে বাল্যবিবাহর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। প্রায় ৪,৩০০ এফআইআর হয়। এখনও পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৩,৫০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চলতি বছর ১১ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত অসম বিধানসভায় বলেছিলেন, গত পাঁচ বছরে বাল্যবিবাহ সম্পর্কিত মামলায় মোট ৩,৯০৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩,৩১৯ জনকে ‘যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা আইন ২০১২’-এর অধীনে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে মামলায় আদালত এ পর্যন্ত মাত্র ৬২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।

বাল্য বিবাহ বিরোধী রাজ্য সরকারের এই দ্বিতীয় অভিযান সম্পর্কে বিরোধী দলনেতা দেবব্রত সাইকিয়া বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে পুলিশকে দিয়ে এভাবে গ্রেফতার করা উচিত হয়নি। এভাবে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা সম্ভব নয়। সমস্ত পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একটি রূপরেখা তৈরি করা দরকার। তাছাড়া এমন অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে, যারা অনেক বছর অগে বিয়ে করেছে। এই ধরনের পুরানো মামলাগুলিকে এখন সামনে এনে সেইসব লোককে হয়রানি করা উচিত নয়। ফেব্রুয়ারিতে অসম সরকার প্রথম অভিযান চালিয়েছিল। তারপরও যদি বাল্যবিবাহের কোনও নতুন ঘটনা সামনে আসে তবে তা অসম পুলিশের ব্যর্থতা। বাল্যবিবাহ রুখতে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। শিশু ও নারী উন্নয়ন দফতরের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য সংস্থাগুলিকে একাজে শামিল করতে হবে। সূত্র – পুবের কলম পত্রিকা

Related Articles

Back to top button
error: