টিডিএন বাংলা ডেস্ক: অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তাঁর পঞ্চম এবং দেশের ৭৫তম বাজেট ঘোষণা করেছেন। এবারের বাজেটে ৮ বছর পর বাড়ানো হল আয়কর ছাড়ের সীমা। এদিন আয়কর মুকুবের সীমা বাড়ানোর ঘোষণা হতেই হাততালিতে ফেটে পড়ে কক্ষ। এক নজরে দেখে নিন বাজেটের প্রথম তিনটি বিষয়:
১) এবার ৭ লক্ষ পর্যন্ত আয়ের উপর কোন ট্যাক্স লাগবে না
২) গরীব কল্যাণ আন্না যোজনার অধীনে আরও এক বছরের জন্য বিনামূল্যে খাদ্যশস্য পাওয়া যাবে৷
৩) এবছর তরুণদের কর্মসংস্থান এবং অবকাঠামোর উপর আরও জোর দেওয়া হয়েছে।
বুধবার প্রায় ১ ঘন্টা ২৭ মিনিটের বক্তৃতায়, নির্মলা সীতারামন দেশের মানুষকে আশ্বস্ত করেন যে, অর্থনীতি সঠিক পথে রয়েছে এবং একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, করোনা এবং যুদ্ধের কারণে যখন গোটা বিশ্ব মন্দার পথে, তখন ভারতের বৃদ্ধি অন্যান্য দেশের তুলনায় শক্তিশালী।
এক ঝলকে দেখে নিন এবছরের বাজেট:
১) আয়কর: ছাড়ের সীমা ৮ বছর পরে বেড়েছে। এবার থেকে বার্ষিক ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করলে আয়কর দিতে হবে না। এই ছাড় শুধুমাত্র নতুন কর ব্যবস্থার অধীনে পাওয়া যাবে। তারপরও আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য ২টি বিকল্প থাকবে। এখন পর্যন্ত ২.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত ছিল। ২০১৪-১৫ বাজেটে শেষবার আয়কর স্ল্যাব পরিবর্তন করা হয়।
২) কোনটা সস্তা, কোনটা দামী: টিভির দাম কমবে। কারণ, খুচরা পণ্যের উপর শুল্ক ৫% থেকে কমিয়ে ২.৫% করা হয়েছে। সস্তা হবে মোবাইল ফোনও। কারণ, উৎপাদনের জন্য কিছু অংশের উপর শুল্ক কমানো হয়েছে। কমবে হীরার দাম। কমানো হয়েছে উৎপাদনে ব্যবহৃত বীজের ওপর শুল্ক। ব্যয়বহুল হবে সিগারেট। সিগারেটের ওপর ১৬% কর বৃদ্ধি। শুল্ক বৃদ্ধি করায় রূপার জিনিসের দাম বাড়বে।
৩) কর্মসংস্থান: চলতি বছরের পুরো বাজেটে মাত্র চারবার চাকরি শব্দটি ব্যবহার করেছেন অর্থমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার ৪.০ সংস্করণ চালু করার বিষয়ে কথা বলেন তিনি। সীতারামন বলেন, তরুণদের আন্তর্জাতিক স্তরে চাকরির জন্য প্রস্তুত করতে ৩০টি স্কিল ইন্ডিয়া সেন্টার খোলা হবে। জাতীয় শিক্ষানবিশ প্রকল্পের অধীনে, ৪৭ লক্ষ যুবকদের সহায়তা করার জন্য ৩ বছরের জন্য ভাতা দেওয়া হবে।
৪) কৃষি: সরকার কৃষি ক্রেডিট কার্ড (কেসিসি) ২০ লক্ষ কোটি বৃদ্ধি করার ঘোষণা করেছে। গত বছর যা ছিল ১৮.৫ লাখ কোটি টাকা। এছাড়া ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর এগ্রিকালচারের মাধ্যমে কৃষকরা সার, বীজ থেকে শুরু করে বাজার এবং স্টার্টআপ পর্যন্ত তথ্য পেতে পারবে। এগ্রিকালচার এক্সিলারেটর ফান্ডের মাধ্যমে গ্রামের যুবকরা স্টার্টআপ শুরু করার সুযোগ পাবে।
৫) শিল্প-স্টার্টআপ: দেশে ৬ কোটির বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং ৮৪ হাজারের বেশি স্টার্টআপ রয়েছে। তাদের জন্য, নতুন ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম ১ এপ্রিল ২০২৩ থেকে প্রযোজ্য হবে। এতে গ্যারান্টি ছাড়াই ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগকে ২ লাখ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা কৌশল সম্মান প্যাকেজ চালু করা হবে, যা এমএসএমই-র উৎপাদন বাড়াতে এবং বাজারে পৌঁছতে সাহায্য করবে।
৬) রেল: ২.৪০ লক্ষ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হয়েছে। বিনিয়োগ ব্যয় ৩৩% বাড়িয়ে ১০ লক্ষ কোটি টাকা করা হচ্ছে।
৭) সিনিয়র সিটিজেন: সেভিংস অ্যাকাউন্টে রাখা পরিমাণের সীমা ৪.৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে 9 লাখ টাকা করা হবে।
৮) মহিলা: সম্মান সঞ্চয়পত্র প্রকল্প শুরু হবে। এতে মহিলারা ২ লক্ষ টাকার সঞ্চয়ের উপর বার্ষিক ৭.৫% সুদ পাবেন।
৯) প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা: বাজেটে ৬৬% বৃদ্ধি করা হয়েছে। খাতটি বর্তমানে ৭৯ হাজার কোটি টাকায় পরিণত হয়েছে।
১০) নতুন পরিকাঠামো: ২০১৪ সাল থেকে বিদ্যমান ১৫৭টি মেডিকেল কলেজের সাথে ১৫৭টি নতুন নার্সিং কলেজ খোলা হবে। ৫০টি নতুন বিমানবন্দর, হেলিপ্যাড এবং ওয়াটার এরো ড্রোন সেন্টার নির্মাণ করা হবে।
১১) ফাইভ জি পরিষেবা: এই পরিষেবাতে চলমান অ্যাপগুলি বিকাশের জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটগুলিতে ১০০টি ল্যাব স্থাপন করা হবে। এসব ল্যাবের মাধ্যমে নতুন সুযোগ, ব্যবসায়িক মডেল ও কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি হবে।