টিডিএন বাংলা ডেস্ক: নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে এবার বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল দিল্লি পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগেই এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। একইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে নবীন জিন্দল, সাংবাদিক সাবা নকভি-সহ আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধেও আলাদা করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত দু’টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। একটিতে নুপুর শর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। অপরটিতে অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আলাদা করে এফআইআর করা হয়েছে। পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, “বিশেষ কিছু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন অভিযুক্তরা। তার ফলে জনতার মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।” ওই আধিকারিক আরো বলেন, অভিযুক্তদের মধ্যে সব ধর্মের মানুষই রয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের কার্যকলাপ খতিয়ে দেখবে পুলিশ। সূত্রের খবর, নূপুর শর্মা, নবীন জিন্দল সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, একটি টিভি বিতর্কে অংশ নিয়ে হজরত মহম্মদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন নূপুর শর্মা। সেই মন্তব্যকে সমর্থন করে টুইট করেন নবীন জিন্দল। এরপরেই তীব্র নিন্দার মুখে পড়েন নূপুর শর্মা। অবস্থা সামাল দিতে বিবৃতি প্রকাশ করে জাতীয় মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় নূপুরকে। সাসপেন্ড করা হয় ৬ বছরের জন্য।দল থেকে বহিস্কার করা হয় নবীন জিন্দলকেও।
এদিকে ইতিমধ্যেই এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মধ্য প্রাচ্যের একাধিক দেশ। ওই সমস্ত দেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের ডেকে জবাব তলব করা হয়েছে। নবী মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর আরব দেশগুলিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে। কুয়েতের কয়েকটি সুপারস্টোরে ইতিমধ্যেই ভারতে তৈরি পণ্য বিক্রি করা বন্ধ করে দিয়েছে। কুয়েত সরকার জানিয়েছে,”ভারতের শাসক দলের নেতারা মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। এই জন্য আপনার ক্ষমা চাওয়া উচিত।” সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডন এবং ইন্দোনেশিয়াও নূপুর শর্মা এবং নবীন কুমারের বক্তব্যে আপত্তি জানিয়েছে। ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-এর তরফেও ভারতের সমালোচনা করা হয়েছে এবং জাতিসংঘের কাছে মুসলমানদের অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। এদিকে ওআইসির বক্তব্যকে ‘সংকীর্ণ’ বলে আখ্যায়িত করে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, “কিছু মানুষের অশালীন মন্তব্য ভারত সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন করে না।”