‘মিজোরাম ভ্রমণ করবেন না’: কড়া নির্দেশ রাজ্যবাসীর প্রতি আসাম সরকারের
টিডিএন বাংলা ডেস্ক : সীমানা বিবাদে প্রতিনিয়তই সুর চড়ছে দুই রাজ্যের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হস্তক্ষেপের পরও মিটছে না সমস্যা। এবার রাজ্যবাসীকে মিজোরামে না যাওয়ার নির্দেশ দিল অসম সরকার।
“সঙ্কটজনক বিরাজমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, আসামের মানুষকে মিজোরাম ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কারণ আসামের মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য কোন হুমকি গ্রহণ করা যাবে না,” পরামর্শে বলা হয়েছে।
নির্দেশিকায় অসম সরকার আরও জানিয়েছে , “সংঘর্ষের ঘটনার পরেও কিছু মিজোরামের কিছু পড়ুয়া, যুব সংগঠন এবং মিজো সমাজের কিছু মানুষ ক্রমাগত অসম সরকার এবং অসমের মানুষের বিরুদ্ধে প্রকোচনামূলক বিবৃতি দিচ্ছে। অসম পুলিশের সংগ্রহ করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে মিজারামের বেশ কিছু মানুষ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রে সজ্জিত।”
ভারতের দুই পড়শি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে বিবাদ নতুন কিছু নয়। নদীর জলবণ্টন নিয়ে বিবাদ তো লেগেই থাকে বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে। কিন্তু অসম এবং মিজোরামের মধ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা ভারতে আগে কখনও দেখাই যায়নি। নিজেদের মধ্যে সসস্ত্র লড়াইয়ে নেমেছে অসম এবং মিজোরাম।
২৬-ই জুলাই আসাম ও মিজোরামের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সীমান্ত সংঘর্ষের সময় আসামের ছয় পুলিশ কর্মী এবং একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার কয়েকদিন পর এই নির্দেশ মূলক পরামর্শ দেয় আসাম সরকার।
অন্যদিকে মিজোরামের দাবি, জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছে অসম। মিজোরামে অর্থনৈতিক অবরোধ করে এই রাজ্যের মানুষকে ভাতে মারার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মিজোরামের স্বরাষ্ট্রসচিব লাবিয়াকসঙ্গি এর , কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় কুমার ভাল্লাকে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে আসাম-ভিত্তিক একটি সংগঠন, বীর লাচিত সেনা বলেছে যে তারা শনিবার থেকে মিজোরামের বিরুদ্ধে অনির্দিষ্টকালের “অর্থনৈতিক অবরোধ” কার্যকর করবে এবং পার্শ্ববর্তী এই রাজ্যের লোকদের প্রবেশ নিষেধ এর কথা বলে।
“মিজোরাম থেকে কাউকে আসামে আসতে দেওয়া উচিত নয়। একই সাথে আমরা রাজ্য সরকারকে মিজোরামে আসামের লোকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এবং প্রয়োজনবোধে তাদের ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানাচ্ছি।”
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দু’জন মুখ্যমন্ত্রীকে সীমান্তে শান্তি নিশ্চিত করতে বলেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় অসম-মিজোরাম সীমান্তে সিআরপিএফ সদস্যদের মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে। অসম এবং মিজোরাম সীমান্তে, লাইলাপুরের কাছে, সংঘর্ষের পরে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে ঠিক হয়। বুধবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় কুমার ভাল্লার সঙ্গে বৈঠক করেন বিবাদমান দুই রাজ্যের মুখ্যসচিব। ছিলেন দুই রাজ্যের পুলিশের ডিজিও। দুই রাজ্যই সেখান থেকে পুলিশ প্রত্যাহার করে নেবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঠিক হয় , যতদিন এই সীমান্ত বিবাদ না মিটবে ততদিন সেখানে মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।