টিডিএন বাংলা ডেস্ক: দাবাং কিংবা সিংহমের মতো বহুল প্রচলিত ভারতীয় সিনেমা গুলিতে দেখানো বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার অজুহাতে বিচার বহির্ভূত হত্যার দৃশ্য সমাজের জন্য অত্যন্ত ‘বিপজ্জনক’। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিচার ব্যবস্থা ও পুলিশ প্রশাসন নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হবে এবং এদের উপর থেকে মানুষের বিশ্বাস উঠে যাবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি গৌতম প্যাটেল।
ইদানিং আমাদের দেশে শুধু সিনেমাতেই নয় বাস্তবেও জেল হেফাজতে মৃত্যু, বিচার বহির্ভূত হত্যা বা এনকাউন্টারের ঘটনা উদ্বেগ জনক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য নাথের নেতৃত্বাধীন উত্তর প্রদেশে পুলিশি এনকাউন্টারে অভিযুক্ত বা আসামীর মৃত্যুর ঘটনা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিচারপতি কি তাহলে দাবাং কিংবা সিংহমের মতো সিনেমাগুলোর নাম করে পরোক্ষ্যে সেই দিকে ইঙ্গিতও দিয়েছেন? এই জল্পনাও শুরু হয়েছে।
শুক্রবার ইন্ডিয়ান পুলিশ ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি গৌতম প্যাটেল এমন মন্তব্য করেন। পুলিশ-প্রশাসনে সংস্কারের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, সমাজের কাছে পুলিশের গুণ্ডা, দুর্নীতিবাজ, এবং যারা নিজের কাজের জন্য কাউকে জবাবদিহি করে না-এমন একটা ভাবমূর্তি রয়েছে। তবে এই একই কথা রাজনীতিবিদ, বিচারক, সাংবাদিক সহ যে কারও ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে। যখনই মানুষের মনে হয় আদালত নিজের কাজ করছে না, তখনই সেখানে পুলিশের ঝাঁপিয়ে পড়ার ঘটনাকে এভাবে উদযাপন করে মানুষ।
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, এই ধরনের সিনেমা গুলোতে বিচারপতিদের এমন ভাবে উপস্থাপন করে অপরাধীদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য যেন দায়ী বিচারপতিরাই। তারপর সেই নায়ক পুলিশ নিজে একা হাতে বিচার পাইয়ে দেন। সিনেমার পর্দায় যখন মানুষ দেখে কোনও ধর্ষক পালাতে গিয়ে পুলিশের এনকাউন্টারে মারা যাচ্ছে, তখন লোকজন যে শুধু সেটাকে উচিত বলেই মনে করে, তা নয়। তারা রীতিমতো উদযাপন করে এটাকে। তারা মনে করে ন্যায়বিচার পেয়েছে। কিন্তু আদৌ কি তাই?’ এটাকে কি ন্যায় বিচার বলে বা এই ভাবে কি ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব? প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি প্যাটেল।