HighlightNewsদেশ

অবশেষে হাইকোর্টের হিজাব রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়ল মামলা

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : কর্নাটক হাইকোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চের হিজাব রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন জমা পড়ল সুপ্রিম কোর্টে। কর্নাটক হাইকোর্টের মঙ্গলবারের রায়ে বলা হয়েছিল হিজাব পরা যেহেতু ইসলাম ধর্মের ‘অত্যাবশকীয় প্রথা’র মধ্যে পড়ে না, তাই সরকারি স্কুল-কলেজে হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হল। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আনস তনবীরের মাধ্যমে মামলাটি করেছেন কর্নাটকের এক ছাত্রী নিবা নাজ। তাঁর আবেদনে বলা হয়েছে হিজাব পরার অধিকারকে নিশ্চিত করেছে দেশের সংবিধানের ১৯(১)(এ) নং ধারা, যেখানে মত প্রকাশের অধিকারকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে।

হাইকোর্ট এই আলোকে বিষয়টাকে পর্যবেক্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। হাইকোর্ট তাদের রায় দিতে গিয়ে সংবিধানের ২১নং ধারায় বর্ণিত ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারকেও উপেক্ষা করেছে। ১৯৮৩ সালের কর্নাটক শিক্ষা আইনে ইউনিফর্ম পরাকে বাধ্যতামূলক করা হয়নি। আবেদনে আরও বলা হয়েছে, উক্ত আইনে ‘কলেজ ডেভেলপমেন্ট কমিটি’ গঠনেরও কোনও বিধান নেই। এই ধরনের কমিটি যদি গঠনও করা হয় তাহলে স্কুল-কলেজগুলিতে ইউনিফর্ম চালু করার ক্ষমতা নেই তাদের হাতে।

কর্নাটক হাইকোর্ট তাদের রায়ে তিনটি বিষয় উল্লেখ করেছিল।
১) হিজাব ইসলাম ধর্মের অত্যাবশ্যকীয় প্রথা নয়।
২) ইউনিফর্ম পরার নির্দেশ দিলে সংবিধানের ১৯(১)(এ) ধারা (মত প্রকাশের স্বাধীনতা) ভঙ্গ হয় না।
৩) সরকারের নির্দেশ জারি করার ক্ষমতা আছে যার জোরে তারা কলেজ ডেভেলপমেন্ট কমিটি গঠন করতে পারে যারা হিজার পরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

কর্নাটক হাইকোর্টের রায়ের এই তিনটি অংশকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মামলাটির উল্লেখ করেন বরিষ্ঠ আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে। তিনি বলেন, জরুরি ভিত্তিতে এই মামলার শুনানি করা হোক-কারণ বহু ছাত্রী তাদের কলেজে যেতে পারছে না। তবে প্রধান বিচারপতি রামানা বলেন, হোলির ছুটির পরেই এই মামলার শুনানি করা যেতে পারে। কারণ আদালতের কাছে অন্য মামলা জমে আছে। আইনজীবী হেগড়ে আদালতকে বলেন, হাইকোর্টের রায়ে মুসলিম এবং অমুসলিম ছাত্রীরা দুই শ্রেণিতে অযাথা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এটা ধর্ম নিরপেক্ষতার আদর্শের পরিপন্থী। আমরা চাইছি মামলাটির তাড়াতাড়ি নিষ্পত্তি হলে ছাত্রীরা কলেজে গিয়ে পরীক্ষার জন্য তৈরি হতে পারতেন। মুসলিম ছাত্রীরা হিজাব বিতর্কের জন্য শিক্ষার পরিসর থেকে বাইরে চলে এসেছেন। তাদের কলেজে যাওয়া সুনিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে মামলাটির শুনানি হওয়া দরকার। মুসলিম ছাত্রীরা ক্লাসে না গেলে তাদের শিক্ষার ক্ষতি হবে। কিন্তু প্রধান বিচারপতি হোলির ছুটির আগে মামলাটি শুনতে রাজি হননি। হাইকোর্টের রায়কে ১৯(১)(এ) এবং ২১ নং ধারায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আরও একটি মামলা এদিন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সূত্র- পুবের কলম পত্রিকা

Related Articles

Back to top button
error: