টিডিএন বাংলা ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত রোখা গেল না শব্দতাণ্ডব। রবিবার বর্ষবরণের রাতে বাজির দাপটে কার্যত নাকাল হতে হলো আমজনতাকে। মধ্যরাতে কলকাতা এবং শহরতলিতে যে হারে শব্দ দাপট চললো, তাতে একটাই প্রশ্ন, এত বাজি এল কোথা থেকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ছাড় কেবলমাত্র ছিল সবুজ বাজির। কিন্তু রবিবার গভীর রাত থেকে যে সব বাজি শহরকে কার্যত কাঁপিয়ে দিয়েছে, তার সিংহভাগই নিষিদ্ধ বাজি। মধ্যরাতে বাজির দাপটে শহরের হাসপাতাল এলাকাগুলিতে শব্দ মাত্রা ছাড়িয়ে যায়।
তবে এরই মধ্যে অবশ্য স্বস্তির খবর, খাস কলকাতায় এবার ডিজে বক্সের দাপট কিছুটা কমই ছিল। পরিবেশ কর্মীরা বলছেন, বাজি, এবং সাউন্ড বক্সের দাপাদাপির ক্ষেত্রে খলনায়ক শহরের বড় আবাসনগুলি। আর ডিজে বক্সের দাপাদাপি বেশি দেখা গিয়েছে শহরতলি এবং মফস্সল এলাকায়। পরিবেশ কর্মীদের প্রশ্ন, কেন নিয়ন্ত্রণে আনা গেল না শহরের নামজাদা আবাসনগুলিকে?
রবিবার রাত ১২টার অনেক আগে থেকে শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ- সর্বত্রই ফাটতে শুরু করে বাজি। রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় শব্দের তাণ্ডব। একই সঙ্গে এত বাজি ফাটতে শুরু করে যে তার শব্দে কার্যত কানে তালা ধরে যায় অনেকের। দীপাবলির সময় প্রটুর বাজি ফাটে ঠিকই, কিন্তু বর্ষবরণে রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে বিপুল পরিমাণে বাজি এক সঙ্গে ফাটতে শুরু করে যে, শিশু থেকে বয়স্ক সকলকেই নাকাল হতে হয়।
মধ্য রাত পার করে বাজির তাণ্ডব চলে গভীর রাত পর্যন্ত। পরিবেশ কর্মী নব দত্ত বলেন, ‘আমরা যেসব অভিযোগ রবিবার রাতে পেয়েছি, তার সিংহভাগই বিভিন্ন নামজাদা আবাসন থেকে। ওসব জায়গায় যে এমন ঘটনা ঘটতে পারে, তা নিয়ে আমরা পুলিশকে আগাম জানিয়েছিলাম। তার পরেও কেন আবাসনগুলিকে সতর্ক করা হলো না, বা তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা গেল না, তা রহস্যজনক।’
আইন অনুযায়ী হাসপাতাল এলাকা সাইলেন্স জ়োন। সেখানে শব্দসীমা দিনে ৪৫ এবং রাতে ৩৫ ডেসিবল। বাজির তাণ্ডব কেমন ছিল, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের মোবাইল অ্যাপে রিয়েল টাইম মনিটরিং ব্যবস্থাতেই তা ধরা পড়েছে। এই অ্যাপে দেখা গিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় শব্দের মাত্রা ছিল ৬২.৫ ডেসিবল, এসএসকেএম হাসপাতালে ছিল ৫১.১ ডেসিবল।
একই সময়ে কসবা এলাকায় শব্দের মাত্রা ছিল ৮৬.২ এবং নিউ মার্কেট এলাকায় শব্দের মাত্রা ছিল ৭১.৬ ডেসিবল। পরিবেশ কর্মীরা বলছেন, পুলিশ যদি অনেক আগে থেকে বাজি বাজেয়াপ্ত করার এবং আবাসনগুলিকে সতর্ক করে দিত, তা হলে শব্দের তাণ্ডবে সাধারণ মানুষ, পশুপাখিকে এত নাকাল হতে হতো না।