HighlightNewsদেশ

দীপ সিধু কে? লালকেল্লার পতাকা-কান্ডের পেছনে ইন্ধন জুগিয়েছেন তিনি, অভিযোগ কৃষক নেতাদের

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: প্রজাতন্ত্র দিবসে কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনরত সদস্যদের মিছিল ঘিরে একের পর এক যে ঘটনাক্রম ঘটতে থাকে তাতে মৃত্যু হয় এক কৃষকের। প্রথমে গাজীপুর থেকে পুলিশের নির্ধারিত রুট বদল করে লালকেল্লায় পৌঁছনো এবং সেখানে পতাকা উত্তোলন ও তারপর পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ। একের পর এক চলতে থাকা এই ঘটনাচক্রে জখম হয়েছেন ৮৬ জন পুলিশ কর্মী। কৃষক ইউনিয়নের নেতাদের অভিযোগ গাজীপুর বর্ডার থেকে রওনা হওয়া ওই ট্রাক্টর মিছিলকে হিংসাত্মক পথে চালিত করার ইন্ধন জুগিয়েছিলেন পাঞ্জাবি গায়ক অভিনেতা দীপ সিধু।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম “ইন্ডিয়া টুডে”-র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী,পঞ্জাবের মুখ্‌তসর জেলায় ১৯৮৪ সালে জন্ম হয় দীপ সিধুর। স্কুলের পাঠ শেষ করে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। স্বল্প সময়ের জন্য আইনজীবী হিসেবেও কাজ করেছেন সিধু। এরপর “কিং ফিশার মডেল হান্ট” প্রতিযোগিতায় জিতে অভিনয় জগতে পা রাখেন। ২০১৫ সালে “রামতা যোগী” নামে একটি পাঞ্জাবি চলচ্চিত্রের সাথে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। যদিও পর্দায় সাফল্য পান ২০১৮ সালে “জোড়া” “দশ নম্বরিয়া” চলচ্চিত্রের হাত ধরে। এরপর ২০১৯ সালে বিজেপি প্রার্থী তথা অভিনেতা সানি দেওয়ালের প্রচার সঙ্গী হিসেবেও দেখা যায় তাঁকে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সানি দেওল দুজনের পাশেই এক ছবিতে দেখতে পাওয়া যায় তাঁকে। দীপ সিধুর এহেন ছবি এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই এ ধরনের একের পর এক ছবি ভেসে উঠছে টুইটারের পর্দায়। ইউটিউবার ধ্রুব রাঠী একটি ছবি পোস্ট করেছেন যেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পাশে দেখা যাচ্ছে দীপ সিধুকে। একই ছবি টুইট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত ভুষণ।

এহেন বিজেপির হেভিওয়েট নেতাদের সঙ্গে ওঠাবসা করা দীপ সিধু গতবছর কৃষক আন্দোলনে শামিল হন। যদিও একাধিক কৃষক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দীপ সিধুর পাকাপাকিভাবে কৃষক আন্দোলনে শামিল হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আপত্তি করা হয়েছিল। এমনকি দীপ সিধুকে “আরএসএসের এজেন্ট” বলেও তোকমা দেন তারা।

অপরদিকে, দীপ সিধু কৃষক আন্দোলনে শামিল হওয়ার পর থেকেই তার সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেন বিজেপি সাংসদ সানি দেওল। এমনকি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন লালকেল্লায় পতাকা উত্তোলন নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে টুইটারে সানি দেওল সাফ জানিয়ে দিয়েছেন,”৬ ডিসেম্বরই টুইটারে জানিয়েছিলাম, আমি বা আমার পরিবারের কারও দীপ সিধুর প্রতি আগ্রহ নেই।”

অন্যদিকে, ফেসবুকের একটি লাইভ ভিডিও বার্তার মাধ্যমে দীপ সিধু জানিয়েছেন,”নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রয়োগ করে লালকেল্লার কেবলমাত্র নিশান সাহিবের পতাকা (শিখ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় পতাকা) উত্তোলন করেছি আমরা। সেখান থেকে জাতীয় পতাকা সরানো হয়নি।”

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=434876944379881&id=749127025186165

তবে, সিধুর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে, এর পেছনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে স্বরাজ ইন্ডিয়ার প্রধান যোগেন্দ্র যাদব বলেছেন,”দীপ সিধু মাইক হাতে কী ভাবে লালকেল্লায় পৌঁছলেন, তা তদন্ত করে দেখা উচিত।” শুধু তাই নয়, কৃষক নেতাদের অভিযোগ কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিলে হিংসার ইন্ধন জুগিয়েছে দীপ সিধু। এর পেছনে বিজেপি এবং আরএসএসের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ কৃষক নেতাদের। গোটা ঘটনার পেছনে “দুষ্কৃতীদের” হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন (বিকেইউ)-এর প্রধান গুরনাম সিংহের অভিযোগ,”দীপ সিধুই আন্দোলনকারীদের উস্কানি দিয়েছিলেন। তিনিই তাঁদের বিপথে চালিত করেন।”

 

 

 

Related Articles

Back to top button
error: