রূপানির পর কুর্সি হারাতে পারেন হিমাচল-মধ্যপ্রদেশ-হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীরাও

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : শুধু গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানিই নন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে কুর্সি সরতে পারে হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও হরিয়ানা এই তিন বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। বিজেপি সূত্রে খবর, এই তিন রাজ্যের প্রভাবশালী বিজেপি নেতা এবং মুখ্যমন্ত্রীর সম্ভাব্য অপসারণে মুখ্য হতে পারে ঝাড়খণ্ড ফর্মুলা। অর্থাৎ নন-ফরমারদের সরিয়ে কেন্দ্রীয় স্তরের আস্থাভাজন কোনও মুখকে রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

ঘটনা হল হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জয় রাম ঠাকুরের সঙ্গে আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের। এই অনুরাগ ঠাকুর আবার এই মুহূর্তে মোদির- শাহর ‘ব্লু আইড বয়’। সূত্রের খবর, জয়রাম ক্যাবিনেটের অনেক মন্ত্রী আবার অনুরাগ ঘনিষ্ঠ। তাই হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা ভোটের আগে অনুরাগ ঠাকুরকেই ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হতে পারে। এমন জল্পনাও ঘুরপাক খাচ্ছে।

অন্যদিকে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান মোদির-শাহর বেশ অপ্রিয়। তা সত্ত্বেও তাকে সরানো সহজ হবে না। বিজেপির এক নেতার কথায়, শিবরাজ এর বিরুদ্ধে বিরাট একটা লবি কাজ করছে। সেই লবির হাতে প্রচুর আসন। দল মনে করলে তাকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। তবে সেটা কবে এখনই বলা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য ওই নেতার। এর পাশাপাশি হরিয়ানার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টারের পারফর্মেন্স একেবারেই পাতে দেওয়ার যোগ্য নয়। এমনই মনে পড়ছে বিজেপির শীর্ষস্তরের একটা বড় অংশ। শেষ বিধানসভা নির্বাচনে কোনও রকম ক্ষমতা দখল করেছেন খাট্টার। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে খাট্টারকে সরানোর ভাবনা।

অনেকেই বলছেন ৩ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সরানোর পেছনে কাজ করছে ঝাড়খণ্ড ফর্মূলা। কী সেই ফর্মুলা? দিল্লিতে বিজেপি সূত্র বলছে, ঝাড়খণ্ড ফর্মূলা হল বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের পারফরম্যান্স মূল্যায়নের নীতি। ঝাড়খণ্ড এর বিগত বিধানসভা নির্বাচনের বেশ কিছুদিন আগে বিভিন্ন সমীক্ষা রিপোর্ট দাবি করছিল, প্রভাবশালী বিজেপি নেতা রঘুবর দাসের পারফরম্যান্স ভালো নয়। তার ওপর রুষ্ট রাজ্যের ভোটারদের একটা বড় অংশ। এমনকি রঘুবর দাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন প্রদেশ বিজেপির নেতাদের একটা বড় অংশ। সেই রিপোর্ট হাতে পেয়ে, রঘুবরকে সরিয়ে অন্য প্রভাবশালী নেতাকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানোর ঝুঁকি নিতে পারেনি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যার খেসারত দিতে হয়েছে বিজেপিকে। হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বে বিরোধী জোট বিধানসভা ভোটে জয়ী হয়। এমনই জানিয়েছেন এক কেন্দ্রীয় নেতা।

এখন দেশের যে কোনও প্রান্তে বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের পারফরম্যান্স সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ এলেই গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অসম, কর্ণাটক ও উত্তরাখণ্ডের মত বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সরানোর পেছনে কাজ করেছে বিজেপির সেই ঝাড়খণ্ড শিক্ষা।