টিডিএন বাংলা ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ জলপাইগুড়িতে ‘শহীদ সম্মান’ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে গিয়ে তাৎপর্যপূর্ণভাবে উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলের বাংলা থেকে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার দাবিকে পরোক্ষ ভাবে সমর্থন করলেন। দিলীপ ঘোষ বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, “আজ যদি জঙ্গলমহল ও উত্তরবঙ্গ পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলাদা হতে চায় তাহলে তার জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দায়ী।” তিনি বঙ্গ বিভক্তির দাবিকে সমর্থন করে বলেন, “স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর আজও কেন উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলে ভালো মানের হাসপাতালে স্কুল তৈরি হয়নি? কেন তাদের কাজের খোঁজে ভীন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয়? সেখানকার মহিলাদের শালপাতা, কেন্দুপাতা, কাঠ সংগ্রহ করে জীবন নির্বাহ করতে হয়। কেন তাদের চিকিৎসা, শিক্ষা, চাকরির জন্য রাঁচি, গুজরাট যেতে হয়? যখন তারা তাদের ন্যায্য অধিকার পাবে না তখন তারা বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার দাবী করতেই পারে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।” এর সঙ্গে তিনি জন বার্লাকে সমর্থন করে বলেন, “তাছাড়া জন বার্লারা জনপ্রতিনিধি তারা যাদের ভোটে জিতেছেন তাদের বক্তব্য যদি তুলে ধরেন সেটা কোন অন্যায় নয়। এটা তার দায়িত্ব।” এরপরই তিনি অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বিচ্ছিন্নতার দাবি জিইয়ে রেখে জিটিএ এর সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। এটা যদি কোন অপরাধ না হয়, তাহলে আমরা জনতার দাবি তুলে ধরলে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলা হবে কেন? দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের নেতা ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “দিলীপ ঘোষ রাজনীতিতে নতুন এসেছেন। তাই অনেক কিছুই জানেন না। আর বিজেপি দলটাও এখানে নতুন। ডিভাইড এন্ড রুল ছিল ব্রিটিশদের, এখন সেই নীতি অনুসরণ করছে বিজেপি।” উল্লেখ্য যে, শিলিগুড়ি থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়া বিজেপির নেতা জন বার্লা বেশ কিছুদিন আগেই বাংলা থেকে উত্তরবঙ্গকে আলাদা করে নতুন রাজ্য তৈরির দাবি তুলেছিলেন। যা নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে শুরু হয়ে যায় সমালোচনার ঝড়। এমতাবস্থায় রাজ্য বিজেপি এই দাবি থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিল। এমনকি দিলীপ ঘোষও এ দাবির পক্ষে বা বিপক্ষে কিছুই বলেননি। কিন্তু এখন তিনি এ মন্তব্য করায় স্বাভাবিকভাবেই জল্পনা বেড়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে।