টিডিএন বাংলা ডেস্ক: আলাদা করে জাতপাতের ভিত্তিতে জনগণনার দাবিতে সীলমোহর দিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। বুধবার সর্বদল বৈঠক শেষে এই বিষয়ে ঘোষণা করেছেন নীতীশ। সর্বদল বৈঠকে উপস্থিত ছিল বিহারের মোট ন’টি রাজনৈতিক দল। বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবও ওই সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক শেষে নীতীশ কুমার ঘোষণা করেন, সবদলের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই জাতিগত সেনসাসের কাজ শুরু করতে চায় বিহার সরকার।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের পর গত বছর দেশে জনগণনা হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারীর কারণে সেই প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়। এরপর, করোনা পরিস্থিতি খানিকটা সামলে ওঠার পর এবছর ফের জনগণনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এবারের জনগণনার ক্ষেত্রে তফশিলি জাতি এবং তফশিলি উপজাতি বাদে অন্য কোনও ক্ষেত্রে জাতপাতের উল্লেখ না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। এমনকী ওবিসিদের ক্ষেত্রেও আলাদা আলাদা জাতির উল্লেখ রাখা হবে না। শুধু ওবিসি বলেই উল্লেখ করা হবে। অনেকে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও শুরু থেকে এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন নীতীশ কুমার। বিহারের বিরোধী দল আরজেডিও নীতীশের পাশে দাঁড়িয়ে জাতিগত সমীক্ষার দাবি জানিয়েছে।
এর আগে, গত বছর আগস্ট মাসের শুরুতেই নীতীশ জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের তরফে জাতিগত ভিত্তিতে জনগণনার ব্যবস্থা না করা হলে বিহার নিজের মতো করেই সেই কাজ করবে। তারপর নীতীশের নেতৃত্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা দেশজুড়ে জাতির ভিত্তিতে জনগণনার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও দ্বারস্থ হন। যদিও কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, জাতির ভিত্তিতে জনগণনা করবে না কেন্দ্র। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই নিজেদের মতো করে বিহার সরকার জাতপাতের ভিত্তিতে জনগণনা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার সর্বদলীয় বৈঠকে সব দলই এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানিয়েছেন, এরপর মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব পাশ করানো হবে এবং তারপরই জাতিগত জনগণনার জন্য তহবিল বরাদ্দ করা হবে।
প্রসঙ্গত, বিহারে শেষ জাতিভিত্তিক জনগণনা হয়েছিল ১৯৩১ সালে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালের সেই সময়ে বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা নিয়ে একটাই রাজ্য ছিল। এরপর থেকে আর কখনো জাতিভিত্তিক জনগণনা হয়নি। বিহারের বিরোধী দল আরজেডির মতে বিহারে জাতিভিত্তিক জনগণনা দরকার। তাহলেই বঞ্চিত সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ পরিষেবা ঘোষণা করা যাবে। প্রায় একই সুর শোনা যায় নীতীশ কুমারের স্বরেও। নীতিশ জানিয়েছিলেন, রাজ্যে জাতিভিত্তিক জনগণনা জরুরী। এই নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক হবে আগামী ২৭ মে। সেই সর্বদলীয় বৈঠকই আয়োজিত হয় বুধবার।