HighlightNewsদেশ

জম্মুতে উচ্ছেদের নামে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল মুসলিমদের বাড়িঘর

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : জম্মুর রূপনগরের পলৌধি অঞ্চলের ১৭টি পাকা এবং কাঁচা বাড়ি জম্মু ডেভলপমেন্ট অথরিটির উদ্যোগে পে লোডার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল। এই সব বাড়ির বাসিন্দারা এখন এই হাড়কাঁপানো শীতে রাতরাতি বাস্তুহারায় পরিণত হয়েছেন। এই ঘটনাকে ঘিরে জম্মু উত্তাল। বিজেপি ছাড়া সমস্ত রাজনৈতিক দল এর বিরোধিতা করেছে। সবচেয়ে বড় অভিযোগ হল, বেছে বেছে মুসলিমদেরই উৎখাত করা হয়েছে। ২ মাসের শিশুকে নিয়ে উৎখাত হয়েছেন নাসরিনা আখতার। তিনি অভিযোগ করলেন, ‘গুজ্জর বাকেরওয়াল উপজাতির কিছু মানুষ কয়েক দশক ধরে এখানে বাস করেন। হঠাৎ বলা নেই, কওয়া নেই, আমাদের বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া হল।’

বুধবার এই নিয়ে জম্মুতে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখান উৎখাত হওয়া মানুষজন। ৭০ বছরের সাইফ আলি বললেন, ‘সকাল ৮টার সময় হঠাৎ আমাদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দিল, কত কাঁদলাম, কোনও কথা শুনল না ওরা, আমরা এখন বাস্তুহারা।’ আকবর হুসেন বললেন, ‘প্রায় ২০০ সশস্ত্র পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনী দিয়ে এলাকা ঘিরে রেখে উচ্ছেদ অভিযান চালাল। তখন বাড়িতে পুরুষরা ছিল না বললেই চলে। কারণ সকালে পুরুষরা দুধ বিক্রি করতে জম্মু এবং অন্যত্র যান। তখন ঘরে মেয়েরা আর বয়স্করা থাকেন। সেই সুযোগটাই ওরা নিয়েছে।’ জম্মুর গুজ্জর বাকেরওয়াল উপজাতির প্রধান জীবিকা হল, দুধ এবং দুধজাত পণ্য বিক্রি করা। অন্তত ৬০ বছর ধরে ওরা এখানে রয়েছে বলে জানা গেল।

এ প্রসঙ্গে জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেন, ‘উচ্ছেদের ক্ষেত্রেও সাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে চলছে প্রশাসন। নয়তো বেছে বেছে মুসলিমদের বসতি উচ্ছেদ করা হল কেন?’ এছাড়া জম্মুর নাগরিক সমিতির নেত্রী সালমা চৌধুরি বলেছেন, ‘৩৭০ ধারা বিলোপের পর থেকেই জম্মুতে গুজ্জর এবং বাকেরওয়ালদের হেনস্থা করা হচ্ছে।’ জম্মু কাশ্মীরের গুজ্জর–বাকেরওয়াল ইউথ কনফারেন্সের মুখপাত্র গুফতার চৌধুরি বলেছেন, ‘বিজেপি নেতা, প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী নির্মল সিংয়ের নাগরোটায় সেনাবাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডারের পাশেই বান গ্রামে যে বিশাল বাংলোটি রয়েছে তা সরকারি জমি জবরদখল করে তৈরি। একবার ওই বাংলো ভাঙার নোটিশ বেরিয়েও আটকে গেল। তার বাংলো তো ভাঙা হচ্ছে না? গরিব গুজ্জরদের বাড়িঘর মেশিন দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া খুব সহজ। কারণ তাঁরা প্রতিবাদ করলেও কার যায় আসে না।’

রাজস্ব নথি থেকে দেখা যাচ্ছে যাদের বাড়িঘর ভাঙা হয়েছে তাঁরা ১৯৪৭ সালের আগে থেকে ওখানে বাস করছেন। ২০১৫ সালে ওঁরা আদালতে আর্জি করেছিলেন, রোশনি আইনে তাঁদের যেন জমির স্বত্ত্ব দেওয়া হয়। একজন তা পেয়েওছিলেন। অন্যরা পাননি। জম্মু ডেভলপমেন্ট অথরিটি বলছে, ৪১ কানাল জমি তাদের ফের দখলে এসেছে, এটাই বড় ব্যাপার। সূত্র- পুবের কলম পত্রিকা

Related Articles

Back to top button
error: