HighlightNewsআন্তর্জাতিকদেশ

ইউক্রেনে ভারতীয় ছাত্ররা মৃত্যু ভয়ে কাঁপছে! মোদির মন্ত্রীরা ৫৬ ভোগের মজা নিচ্ছে!

বিশেষ প্রতিবেদন, টিডিএন বাংলা : যুদ্ধ একদিন শেষ হয়ে যাবে। লিডার একে অপরের করমর্দন করবে। বুড়ি মা তার ছেলের জন্য অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকবে। রাস্তার মোড়ে ছোট্ট ছেলেটা অপেক্ষা করবে তার সৈনিক বাবার মুখে যুদ্ধের রোমাঞ্চকর কাহিনী শোনার জন্য।

কিন্তু সবার মনে যে প্রশ্নটা লুকিয়ে আছে তা কেউ জানে না। সবাই ভাববে এই দেশকে বিক্রি করল কে তার মূল্য আমাদের কেন পরিশোধ করতে হচ্ছে। যুদ্ধের খবর মানে ইউক্রেনের কতজন নিহত হল। আবার পরক্ষণেই রাশিয়ার কতজন। কিন্তু তার থেকে বড় কথা যারা মারা গেলেন তাদের ছেলে মেয়ে, বাবা-মা, পরিবার আছে। আত্মীয়-স্বজন আছে। নিজের পরিবারের স্বপ্ন আছে। আমার আপনার মত সাধারণ ঘরের, একজন সাধারণ মানুষ। যারা চিরদিনের মতো এই পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিয়েছে।

গত সোমবার ইউনাইটেড নেশনস এ ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত একটা টেক্সট মেসেজ পড়ে শোনান। ইউক্রেনের একজন সৈনিক মৃত রাশিয়ান সৈনিকের মোবাইল থেকে নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘মা আমি এখন ইউক্রেনে আছি। আমাদের বলা হয়েছিল, ইউক্রেনের জনতা সাদরে গ্রহণ করবে। কিন্তু এখানে পরিস্থিতি একদম উল্টো। তারা আমাদের গাড়ি আটকাচ্ছে। এগোতে দিছেনা। প্রয়োজনে গাড়ির চাকার নিচে চলে আসছে। চারিদিক থেকে ভয়াবহ বোমাবৃষ্টি। খুব সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমি খুব ভয় পাচ্ছি।” তারপর সম্ভবত রাশিয়ান সেনাটি মারা গিয়েছেন।

আমাদের অধিকাংশ সংবাদ মাধ্যম এন্টারটেইনমেন্টের বিষয় মনে করে যুদ্ধের খবর পরিবেশন করছে। ভিডিও গেমের ফুটেজ ব্যবহার করছে যুদ্ধের বর্ণনা দিতে গিয়ে। আপনারা বিভিন্ন মাধ্যমে এই যুদ্ধের ঘটনা ও বর্ণনা দেখেছেন। ইউক্রেনের বেশিরভাগ এলাকা, বড় বড় অফিশিয়াল বিল্ডিং, সরকারি দপ্তর লক্ষ্য করে বমা বর্ষণ করা হচ্ছে। ৪০ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে রাশিয়ান সৈনিক ট্যাংকসহ দখল করে আছে। বৈদ্যুতিক টাওয়ার ও ফোনের টাওয়ার ধ্বংস করা হচ্ছে। সাধারণ নাগরিকদের টার্গেট করা হচ্ছে।

পুতিন বলছেন, সাধারণ নাগরিকদের তিনি আক্রমণ করবেন না। কেবলমাত্র মেলেটারি কাম্পগুলোকে টার্গেট করবে। কিন্তু পুতিনের কথা মিথ্যা বলে প্রমাণিত। রাশিয়া এক্ষেত্রে যে ধরনের ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবহার করছে তা প্রায়ই লক্ষ্যবস্তু থেকে হাফ কিলোমিটার দূরে গিয়ে পড়ছে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই হসপিটাল, জনবহুল এলাকায় বমা পরছে।

আরও জানা যাচ্ছে ইউক্রেনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহর খার, খারকিব। এখনও পর্যন্ত যা খবর রাশিয়ান সৈনিক এই দুই শহর দখল করার জন্য এগোচ্ছে। ভারত সরকার এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বলা হয়েছে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, যেমন ভাবে সম্ভব, রোমানিয়া ও নিকটবর্তী কোন দেশের বর্ডার এরিয়ায় হাজির হোক। সেখান থেকেই তাদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে।

কিন্তু দুঃখের বিষয় চারশো পাঁচশো কিলোমিটার রাস্তা, মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণের শব্দ উপেক্ষা করে কিভাবে তারা বর্ডার এলাকায় আসবে। তার কি কোন ব্যবস্থা আছে? উত্তর না। আমাদের ছেলে মেয়েরা যুদ্ধের মাঝখানে ফেঁসে আছে। খিদের জ্বালায় ছটফট করছে। বিদ্যুৎ, পানীয় জল, খাবার ছাড়া দিন কাটাচ্ছে। অন্ধকারে বরফের মধ্যে ঘুমতে হচ্ছে। অসহায়, নিরুপায় হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছে। সাহায্যের জন্য কাকুতি-মিনতি করছে।

আর এই সংকট পূর্ণ মুহূর্তে আমাদের বিদেশমন্ত্রী মিনাক্ষি লেখি যোগ্গা বাসু বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন আর স্থলভূমি কিভাবে রক্ষা করা যায় তার পরামর্শ নিচ্ছেন। এই বাবার নামে অবৈধভাবে আদিবাসীদের ভূমি অধিগ্রহণের মামলা চলছে। অন্যদিকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশের দায়িত্ব ভুলে, নিজের দলের জন্য নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত আছেন। তার ক্যাবিনেট মন্ত্রী পরিষদরা ৫৬ ভোগের আনন্দ উপভোগ করছেন। আমরা কি এরকম প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলাম?

Related Articles

Back to top button
error: