“এ যেন নরক যন্ত্রণা!”; দিল্লিতে ফিরে জানালেন ভারতীয় ছাত্র
টিডিএন বাংলা ডেস্ক: “রোমানিয়া সীমান্ত পেরিয়ে আসতে পারাটাই ছিল সবথেকে কঠিন কাজ। এ যেন নরক যন্ত্রণা!” রাশিয়ার সামরিক অভিযানে বিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে দেশে ফিরে এমনটাই জানালেন ভারতীয় ছাত্র শুভ্রাংশু। একটি সর্বভারতীয় শবদ্মধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ওই ছাত্র জানিয়েছেন তার অভিজ্ঞতার কথা। এদিন দিল্লি বিমানবন্দরে ইউক্রেন থেকে ফিরে আসা ভারতীয়দের সঙ্গে থাকা ওই ছাত্র জানিয়েছেন রাশিয়ার সেনারা ইউক্রেনের খারকিভে সরকারি বাসভবনে হামলাবচালালে সেখানেই নিহত হন এক ভারতীয় ছাত্র। তিনি বলেন, প্রায় কয়েকশো ভারতীয় ছাত্রকে রোমানিয়ার সীমান্তে পৌঁছানোর জন্য সুদীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করতে হয়েছে।
তিনি জানান ইউক্রেন থেকে প্রতিবেশী দেশগুলিতে যাওয়ার জন্য তাদের কি কি সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। ওই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে
তিনি বলেন,”আমরা ভিন্নিতসিয়া থেকে রোমানিয়ার সীমান্তের উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা করি। আমাদের এই যাত্রা সুখকর ছিল না। আমাদের প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করতে হয়েছিল। তবে আমরা নিরাপদে সীমান্তে পৌঁছেছি। আমাদের হাঁটতে সমস্যা ছিল না। সমস্যা ছিল রোমানিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করা। সীমান্ত অতিক্রম করা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। ছাত্রছাত্রীরা আগে যাবার জন্য নিজেদের মধ্যেই বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ছিলেন। ছাত্র ছাত্রীরা কাঁদছিল। কেউ কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ইউক্রেনীয়দের পায়ে পড়ে সীমানা অতিক্রম করার জন্য। ছাত্রদের রাইফেল স্টক দিয়ে আঘাত করা হচ্ছিল। পরিস্থিতি খুব খারাপ হয়ে পড়েছিল। ওরা আমাদের পছন্দ করছিল না। ওদের বক্তব্য ছিল, যখন গেট খোলা হবে তখন ইউক্রেনীয়দের আগে ঢুকতে দেওয়া হবে। তবে একবার আমরা সীমান্ত অতিক্রম করে আসবার পর ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে আমাদের দায়িত্ব নেওয়া হয় এবং আমাদেরকে প্রায় পাঁচতারা হোটেলের মত সুবিধা দেওয়া হয়। এরপরে আমরা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হইনি।”
প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৬ হাজার ভারতীয় ছাত্র ইউক্রেনে আটকে রয়েছে। অধিকাংশ ছাত্ররাই নিজেদের পরিস্থিতির কথা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিও শেয়ার করছেন। কেউ আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যাংকের থেকে, কেউ মেট্রো স্টেশন বা বম্ব শেল্টার থেকে ছবি পোস্ট করেছেন। গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার সেনার হাত থেকে বাঁচতে ওই সমস্ত জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৯ হাজার ভারতীয়কে বিভিন্ন বিমানে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।