আবার বিতর্কে কর্ণাটক, পূজোয় মুসলিম ব্যবসায়ীদের স্টল নিষিদ্ধ!

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : বিগত কয়েক মাস ধরেই হিজাব বিতর্কে উত্তাল কর্ণাটক। আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে কর্ণাটক সরকারের একটি সিদ্ধান্ত। মন্দির মেলাকে কেন্দ্র করে ফের বিতর্ক দানা বেঁধেছে। মন্দিরের উত্‍সব-মেলায় মুসলিম ব্যবসায়ীরা দোকান দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে কর্ণাটক সরকার। কর্ণাটকের উপকূল অঞ্চলের উত্‍সব মেলায় স্থানীয় মুসলিম ব্যবসায়ীরা বছরের পর বছর ধরে স্টল দিয়ে আসছেন। কর্ণাটক সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই এবার প্রতিবাদে সরব হলেন শাসকদল বিজেপির দুই বিধায়ক। এই সিদ্ধান্তকে ‘অন্যায়, অগণতান্ত্রিক এবং পাগলামি’ বলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শাসকপক্ষের দুই নেতা। যার ফলে অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির।

সম্প্রতি কর্ণাটকের বেশ কিছু জায়গায় মন্দির কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, হিন্দু দাগরণ ভেদিকে, বজরং দল এবং শ্রীরাম সেনার মতো হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে হিন্দু অনুষ্ঠানের সময় মন্দিরের বাইরে যে মেলা হবে সেখানে দোকান দিতে বা ব্যবসা করতে পারবেন না মুসলিমরা। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির আবদার মেনে এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তকে সমর্থন দিয়েছে কর্ণাটক সরকার। এরই বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন দুই বিধায়ক এ এইচ বিশ্বনাথ এবং অনিল বেনা। যদিও বিজেপি সরকার ২০০২ সালে তত্‍কালীন কংগ্রেস সরকারের নির্দেশিকাকেই অনুসরণ করেছে বলে দাবি করেছে।

বিশ্বনাথ বলেছেন, ‘এটা পাগলামি। কোনও ঈশ্বর বা ধর্ম এধরনের শিক্ষা দেয় না। সব ধর্মকেই গুরুত্ব দিতে হয়। রাজ্য সরকারের এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা উচিত। আমি জানি না সরকার কেন এই ইস্যতে নীরব।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডে কতজন ভারতীয় রয়েছেন? বিশ্বে কতজন ভারতীয় রয়েছেন, তাহলে কি মুসলিম দেশগুলিতে ভারতীয়রা কাজ করেন না? এই দেশগুলি যদি আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করে তাহলে কী হবে! মুসলিমরা দেশভাগের পর ভারতেই থেকে গেছেন। ওঁরা জিন্নার দেশে যাননি। এটা আমাদের মানতে হবে, ওঁরাও ভারতীয়। অন্য কোনও দেশের নাগরিক নন।’

বিধায়ক অনিল বেনা জানিয়েছেন, ‘মুসলিম ব্যবসায়ীদের উপর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তিনি। তিনি বলেছেন, মন্দির উত্‍সবে কোনওমতেই মুসলিম ব্যবসায়ীদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো যায় না। আমাদের এগুলোর অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। সংবিধানে সবার সমানাধিকারের কথা বলা আছে। যে কোনও জায়গায় যে কেউ ব্যবসা করতে পারেন। আমরা কোনও নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারি না।’

হিন্দু জাগরণ মঞ্চের বেঙ্গালুরু শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কুক্কেহাল্লি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “হিজাব নিয়ে আদালতের নির্দেশের পরে যেভাবে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষজন দোকান পাট বন্ধ করে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন তাতে ধর্মীয় বিভাজনের স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে, আর তারই প্রেক্ষিতে আমাদের এই সিদ্ধান্ত।”