কর্নাটকের স্কুলে সদস্যদের অস্ত্রচালনার পাঠ!‌ বজরং দলের দাবি, আগ্নেয়াস্ত্র নয়, এয়ারগান

টিডিএন বাংলা ডেস্ক:‌ গত ৫ থেকে ১১ মে কর্নাটকের কোডাগু জেলার পোন্নমপেটে রীতিমতো স্কুলে শিবির করে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ছবিতে দেখা যাচ্ছে হাতে বন্দুক নিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে তাদের সদস্যরা। আর এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। আর এই প্রশিক্ষণ শিবির করার অভিযোগ কোনও জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়। বরং এই শিবির করার অভিযোগ উঠেছে সঙ্ঘ পরিবারের সদস্য বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যুব সংগঠন বজরং দলের কর্নাটক শাখার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সেখানে শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির নামে লাঠি চালানো, ত্রিশূল চালানোর পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছিল। একে তারা শৌর্য প্রশিক্ষণ বর্গ বলে থাকে। যদিও সমালোচনা শুরু হতেই বজরং দলের পক্ষ থেকে ওই প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজক রঘু সকলেশপুর অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সেখানে তাদের সদস্যদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নয়, এয়ারগান ছিল।

জানা গিয়েছে, ৫ থেকে শুরু হওয়া ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে ১১৬ জন সদস্য অংশ নিয়ে ছিল। যাদের কেউই স্কুলের পড়ুয়া নয়। আর এই শিবির ১১ মে পর্যন্ত চলেছে। পুলিশ সুপার এমএ আইয়াপ্পা জানালেন, ‘‌প্রতি বছর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দল এই শিবিরের আয়োজন করে। এ বছরও করেছিল। তবে কোনও অনুমতি নেয়নি। সোশাল মিডিয়া থেকে এর বিষয়ে জানতে পেরেছি। কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অস্ত্র আইনে এয়ার গান ব্যবহারের জন্য অনুমতি নিতে হয় না। এই নিয়ে তদন্ত করছি।’‌ জেলার ডেপুটি ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইনস্ট্রাকশন বেদমূর্তিও জানিয়েছেন, ওই শিবির করার জন্য কোনও অনুমতি চাওয়া হয়নি। দেওয়াও হয়নি। তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘প্রশিক্ষণ শিবির সাধারণ স্কুল, কলেজেই হয়। তবে অস্ত্র চালনার শিবির নয়। তাই স্কুলকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। তারা জবাব দেবে।’ সোশাল ডেমোক্র‌্যাটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া ইতিমধ্যেই জেলার বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছে।

কর্নাটক বজরং দলের নেতা তথা শিবিরের অন্যতম আয়োজক রঘু সকলেশপুর সোমবার পোন্নমপেটের স্কুলে প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজনের কথা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সদস্যদের শারীরিক এবং মানসিক সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই ওই ‘শৌর্য কর্মশালা’র আয়োজন করা হয়েছিল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ত্রিশূল দীক্ষার পাশাপাশি একাগ্রতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ শিবিরে এয়ারগান চালানোর অনুশীলনের ব্যবস্থা ছিল। এয়ারগান কেনা বা অনুশীলনের জন্য কোনও লাইসেন্স লাগে না। আগ্নেয়াস্ত্র আইনও ভঙ্গ করা হয় না।’’ কর্নাটকের কোদাগু জেলায় হয়েছে এই শিবির। জানা গিয়েছে, এই জেলায় প্রায়ই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ লেগে থাকে। সেদিক থেকে বেশ সংবেদনশীল এই জেলা। সেখানকারই পোন্নামপেটের সাই শঙ্কর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হয়েছে শিবির।