টিডিএন বাংলা ডেস্ক : বৃহস্পতিবার পাঞ্জাবের লুধিয়ানা কোর্ট কমপ্লেক্সে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত ছিলেন গগনদীপ এমনটাই সন্দেহ গোয়েন্দাদের। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অভিযুক্ত গগনদীপ নিজেই এই বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে নিহত গগনদীপকে নিয়ে দানা বেঁধেছিল রহস্য! তদন্তে জানা গিয়েছে গগনদীপ সিংহ পঞ্জাব পুলিশের এক বরখাস্ত হেড কনস্টেবল। মাদকপাচারে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় এবং দু’বছরের কারাদণ্ডও হয় গগনদীপের। তাঁর সিম কার্ড এবং ওয়্যারলেস ডঙ্গলের মাধ্যমেই তাঁকে প্রাথমিক ভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
গোয়েন্দা আধিকারিকরা খলিস্তানপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। অনেকে মনে করছেন, সামনেই বিধানসভা ভোট। তার আগেই পাঞ্জাবকে অশান্ত করে তোলার জন্য পরিকল্পনা করছে একটি মহল। গোয়েন্দা সূত্র খবর, জার্মানিতে আত্মগোপনকারী খালিস্তানি জঙ্গি নেতা জসবিন্দর সিংহ মুলতানি লুধিয়ানা আদালতের বিস্ফোরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। পঞ্জাবের হোশিয়ারপুর জেলার মনসুরপুর গ্রামের বাসিন্দা মুলতানির সঙ্গে আইএসআই এবং পাক চোরাচালান চক্রের যোগাযোগ রয়েছে। সেই ‘নেটওয়ার্ক’ ব্যবহার করেই ভারতে অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহ করা হয়েছিল। পঞ্জাব পুলিশের ডিজি সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়ও লুধিয়ানা বিস্ফোরণের নেপথ্যে খলিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী বব্বর খালসা এবং চোরাচালান চক্রের ভূমিকা থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি পাঞ্জাবের প্রশাসনকে আগেই কয়েকবার সতর্ক করেছিল যে সন্ত্রাসবাদী হামলা হতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলি আশঙ্কা করে ছিল চলতি বছরেই পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং খালিস্তানি জঙ্গি সংগঠনগুলি রাজ্যে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে পারে। এমনকী সরকারি ভবন বা ভিড়ের মধ্যে বিস্ফোরণ হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়।
ইতিপূর্বে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী বলে ছিলেন, এই বিস্ফোরণের পিছনে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি মনে করেন, ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ, গণপিটুনিতে মৃত্যু এই সব থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই এই বিস্ফোরণ। একই সঙ্গে তিনি বিস্ফোরণের জন্য রাজ্যের গোয়েন্দাদের ব্যর্থতার যে অভিযোগ উঠছে তা সম্পুর্ণ ভুল বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও তাঁর দাবি, “সরকারি সংস্থাগুলো সতর্ক রয়েছে এবং তদন্ত চলছে। কিছু লোক পঞ্জাবে অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়। সরকার সতর্ক রয়েছে। কোনও ধরণের অসামাজিক কাজ বা বিশৃঙ্খলতা বরদাস্ত করবে না রাজ্য সরকার।”