HighlightNewsরাজ্য

গভীর রাতে জোড়াবাগানে সিলিন্ডার ফেটে অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে ছাই বসতি, আগুন নিয়ন্ত্রণে দমকল বাহিনী

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : আবারও এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী হল উত্তর কলকাতার। শুক্রবার রাতে উত্তর কলকাতার জোড়াবাগান এলাকায় একটি বস্তিতে ঘটল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। জানা গিয়েছে রাত ১০.৩০ নাগাদ আগুন লাগে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণেই আগুন লেগে যায় ওই ঝুপড়িতে। ওই বস্তিতে রাতে কোন এক ঝুপড়িতে রাতের রান্না করার সময় হঠাত্‍ করে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে যায়। একটি ঝুপড়িতে আগুন লাগার পর সেই আগুন পরপর পাশের ঝুপড়ি গুলিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তারপর আরও দুটি ঝুপড়ির গ্যাস সিলিন্ডার আগুনের সংস্পর্শে এসে ফেটে যায়। তাতে আগুনের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর কলকাতার জোড়াবাগান থানা এলাকার মণ্ডল স্ট্রিটের পাঁপড় গলির ঝুপড়িতে।

এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ফলে পুড়ে ছাই হয়েছে জোড়াবাগান বসতির একাধিক ঝুপড়ি। আগুনে বস্তিটি পুড়ে যাওয়ায় আপাতত গৃহহীন ওই পরিবারগুলি। এখনো পর্যন্ত এই ঘটনায় প্রাণহানির কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, ভরত মাথুর নামে এলাকার এক বাসিন্দা আগুন নেভাতে গিয়ে বিদ্যুতের একটি তারে হাত লাগায় বিদ্যুত্‍স্পৃষ্ট হন। আপাতত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই বস্তিতে প্রায় ৪৫ টি পরিবার বাস করত। এছাড়া সেখানে বাসিন্দাদের মধ্যে অনেক ছাত্রছাত্রী ছিলেন। তাঁদের বইখাতা সব পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি অনেকের সঞ্চয়ের টাকা ও ব্যাংকের সমস্ত নথিপত্র পুড়ে গিয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে একটি আশ্রয়ের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

প্রথমে একটি টিনের চাল থেকে আগুনের ফুলকি ও ধোঁয়া উঠতে দেখা যায় স্থানীয় বাসিন্দারাই দমকলে খবর দেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে প্রথমে এসে পৌঁছায় দমকলের ৪ টি ইঞ্জিন। কিন্তু আগুনের ভয়াবহতা দেখে আরও ২ টি ইঞ্জিন আনা হয়। তারপরেও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় অকুস্থলে আসে দমকলের মোট ১২টি ইঞ্জিন। আশেপাশের বাড়িগুলির গ্যাস সিলিন্ডার বাইরে বের করে দেন তাঁরা। দমকল কর্মীদের প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে বাসিন্দাদের দাবি, আগুনের গ্রাসে ছাই হয়েছে প্রায় ২৫টি ঘর।

বস্তি এলাকায়টি অত্যন্ত ঘন জনবসতিপূর্ণ হওয়ায় দমকলের কাজ করতে বেশ সমস্যার মুখে পড়তে হয়। শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। শনিবার সকালেও ওই ভয়াবহ আগুনকে ধিকি ধিকি জ্বলতে দেখা গিয়েছে বস্তিতে। দমকল বাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়, ওই একজন ছাড়া আর কেউ আহত হননি। আগুন ছড়িয়ে যাওয়ার পরেই সবাই নিরাপদ জায়গায় চলে এসেছিলেন। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই বেশি। খুব ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে বলেই জানান তাঁরা।

Related Articles

Back to top button
error: