Mamata Banerjee: তেলের বদলে মদে কর ছাড়ের সিদ্ধান্ত রাজ্যের!

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : বিরোধীরা পেট্রল, ডিজ়েলে কর (ভ্যাট) ছাড় দেওয়ার দাবি জানালে মমতা বলেন, কোষাগারে টান আছে তাই এখনি পেট্রল, ডিজ়েলে কর (ভ্যাট) কমানোর অবস্থায় নেই রাজ্য। অথচ এবার রাজ্য সরকার তেলের বদলে মদে কর ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন উঠছে তেলে কর ছাড় দেওয়ায় যদি কোষাগারে টান পড়ে তাহলে মদের বরাতে কর ছাড় কী ভাবে জুটল? মদের বদলে জ্বালানি তেলেই কর ছাড় দেওয়া উচিত নয় কি?
রাজ্য সরকারের অবশ্য দাবি, মদের দাম কমলে, তার বিক্রি বাড়বে। ফলে দামি মদের চাহিদাও বৃদ্ধি পাবে। তাতে রাজ্যের রোজগারে আয় বাড়বে। করোনা পরিস্থিতির কারণে খালি কোষাগারের হাল ফেরাতে কিছুটা সুবিধা হবে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের অভিযোগ, করোনা-কালে তেলে শুল্ক ও সেস বসিয়ে প্রায় চার লক্ষ কোটি টাকা ঘরে তুলেছে কেন্দ্র। সেসের ভাগ রাজ্য পায় না। আর মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার সময়ে প্রতি লিটার পেট্রল ও ডিজ়েলে উৎপাদন শুল্ক যেখানে যথাক্রমে ৯.৪৮ ও ৩.৫৬ টাকা ছিল, সেখানে এখন তা ২৭.৯০ ও ২১.৮০ টাকা। অথচ দীপাবলির সময়ে নামমাত্র শুল্ক (প্রতি লিটার পেট্রল, ডিজ়েলে যথাক্রমে ৫ এবং ১০ টাকা) কমিয়ে এখন বাকি দাম কমানোর দায় রাজ্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে তারা।

দেশে তৈরি বিদেশি মদের (ইন্ডিয়ান মেড ফরেন লিকার) দাম ২০%-২৫% আর আমদানি করা বিদেশি মদের দাম ৩০%-৩৫% কমছে। আবগারি দফতরের দাবি, এতে ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এমনকি, দিল্লির থেকেও কোনও কোনও মদের দাম এ রাজ্যে কম হবে। বিরোধী দলগুলির প্রশ্ন, মদে কর কমানোর ফলে যে পরিমাণ রাজস্বের ক্ষতি হবে, তা সামলানোর ধাক্কা যদি রাজ্যের থাকে, তাহলে জ্বালানি তেলে ভ্যাট ছাঁটাই করা হ্বে না কেন? মমতা বন্দোপাধ্যায় পূর্বেই বলেছেন, রাজ্য তেলে প্রতি লিটারে এক টাকা কর ছেড়ে দেওয়ার ফলে ইতিমধ্যেই দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের। যদিও কেন্দ্র সে কথা মুখে আনে না। তাদের আরও অভিযোগ, কেন্দ্রের কাছে যে বিপুল টাকা বকেয়া, তা পেলে তেলে করছাড় দিতেও অসুবিধা হত না নবান্নের। এক কর্তার কথায়, ‘‘গত ১০ বছরে সেস এবং সারচার্জ বাবদ কেন্দ্রের আয় ৫৭ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে প্রায় ৪.৫১ লক্ষ কোটি টাকা। তাই সেস এবং সারচার্জ ‘ডিভিসিব্ল পুলের’ আওতায় আনা হলে, রাজ্যগুলির মধ্যে সেই অর্থের ভাগাভাগি হবে। ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে পারবে রাজ্যগুলি।’’

আবগারি কমিশনার উমাশঙ্কর এস বুধবার বলেন, ‘‘জাল বা অবৈধ মদের জোগান বাড়লে, তা জনস্বাস্থ্যের উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সেই কারণে এই সিদ্ধান্ত।’’ এতে রাজস্বের ক্ষতি হবে না বলেই তাঁর আশা। তাদের আরও যুক্তি, ২০১৯-২০ সালে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের তুলনায় মদ বাবদ রাজস্ব প্রায় ১০% বেড়েছে। গত বছর ওই খাতে আয় ছিল, ১২,৩৭১ কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরে এপ্রিল-অক্টোবরেই তা ৫,৪৭০ কোটি। এক কর্তার কথায়, ‘‘লকডাউন, ভোট এবং অন্যান্য কারণে অনেক দিন মদের বিক্রি বন্ধ বা কম ছিল। তাই আগামী দিনে রাজস্ব আরও খানিকটা বাড়বে।’’ পাশপাশি রাজ্য সরকার পরিকল্পনা করছে, মদ থেকে রোজগার বাড়াতে বিমানবন্দরেও তার দোকান খুলবে রাজ্য বেভারেজ়েস কর্পোরেশন। কলকাতা, বাগডোগরা ও অন্ডাল বিমানবন্দরে মদের দোকান খোলা হবে। সরকারি হাতেই থাকবে তার পরিচালনা। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এ নিয়ে ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে রাজ্য।