টিডিএন বাংলা ডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের সিওনি জেলায় গোহত্যার সন্দেহে দুই আদিবাসীকে পিটিয়ে হত্যা করল দুষ্কৃতীরা। হামলাকারীদের হাতে আরও একজন আহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কুড়ি জনের একটি দল ওই আদিবাসীদের বাড়ি যায় এবং তাদের বিরুদ্ধে গো-হত্যার অভিযোগ তোলে। এরপর সেখানেই দুই আদিবাসীকে নৃশংসতার সঙ্গে পিটিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করে তারা। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই ওই দুই আদিবাসী মারা যান।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে জব্বলপুর-নাগপুর হাইওয়েতে বিক্ষোভে বসেন কংগ্রেস বিধায়ক অর্জুন সিং কাকোদিয়া। সিওনির পুলিশ প্রধান এবং অন্যান্য আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই নিপীড়িত আদিবাসীদের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন।
এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কুড়ি জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছ’জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস কে মারাভি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন,”দুজন আদিবাসী পুরুষ মারা গেছেন। অভিযোগ করা হয়েছে ১৫-২০ জনের একটি দল ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িতে গিয়ে একটি গরুকে হত্যার অভিযোগ এনে তাদের ওপর হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার সময় দু’জন লোক মারা যায় এবং অন্য একজন সামান্য আহত হয়েছেন”।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান,”একটি খুনের মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে… পুলিশের কয়েকটি দল অভিযুক্তদের খোঁজ করছে। কিছু অভিযুক্তদের নাম করা হয়েছে (অভিযোগে) এবং বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি। আমরা দু-তিনজন সন্দেহভাজনকে হেফাজতে নিয়েছি। নিহতদের বাড়ি থেকে প্রায় ১২ কেজি মাংস পাওয়া গেছে।”
হামলায় আহত অভিযোগকারী ব্রজেশ বাট্টি জানিয়েছেন, জনতা দুই আদিবাসী সম্পত বাট্টি এবং ধনসাকে লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করে এবং সেখানে গেলে তাকেও মারধর করা হয়।
এই ঘটনার পর কংগ্রেসের তরফ থেকে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত এবং দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ বলেন,”আমি সরকারের কাছে এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত ঘোষণা করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। নিহতদের পরিবারকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিতে হবে এবং সরকারী খরচে আহত ব্যক্তির চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।” একই সাথে কমলনাথ আরও জানান, কিছু স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি যে, এই ঘটনার সঙ্গে বজরং দল জড়িত রয়েছে। কমল নাথের দাবি, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর ডেটা অনুযায়ী মধ্যপ্রদেশে আদিবাসীদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।