টিডিএন বাংলা ডেস্ক: ‘হিন্দুস্তান মে রেহনা হ্যায় মোদি, যোগী কো ভোট দেনা হোগা’ বলেই চলন্ত ট্রেনে বেছে বেছে সংখ্যালঘু যাত্রীদের হত্যা করেছিল জাওয়ান কনস্টেবল চেতন সিং। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল উত্তরপ্রদেশে। তবে চিত্রটা খানিকটা আলাদা। এবার বেছে বেছে মুসলিম সমাজকর্মীদের বাড়িতে হানা দিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। মঙ্গলবার একযোগে চার জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থা।
পিপল ইউনিয়ন অফ সিবিল লিবার্টিসের রাজ্য সম্পাদক তথা নামী হিন্দি ম্যাগাজিন ‘দাস্তাক’-এর এডিটর সীমা আজাদের বাড়িতে হানা দেয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। সীমা ও তাঁর স্বামী বিশ্ববিজয় আজাদ উভয়ের প্রশিক্ষণরত আইনজীবী। এদিন বিশ্ববিজয় সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থা এএনআইকে জানান, এই তল্লাশি অভিযান ‘আওয়াজ বন্ধের’ অভিযান। গণতন্ত্রের কণ্ঠ রোধের অভিযান। সামনে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে ‘প্রতিবাদী শত্রুদের’ নির্মূল করতে চাইছেন কেন্দ্রীয় শাসক দল। অবৈধ খনন ও কৃষকদের জমি জোরপূর্বক হাতানোর বিষয় নিয়ে কণ্ঠ চড়ানোর দায়ে অতীতে আমাদের নকশালবাদী বলে দেগে দেওয়া হয়েছিল। জেল পর্যন্ত হয়েছিল। আজ আবার এসেছে। নতুনত্ব কিছু নয়। ভোট এলেই এমনটা করে।
এদিন সীমার ভাই মনিশ আজাদ ও স্ত্রী অমিতা আজাদের বাড়িতেও হানা দেয় এনআইএ। মাওবাদী যোগসূত্রে পূর্বেও জেলে গিয়েছিলেন দম্পতি। এনআইএ-এর তৃতীয় দল ইনকিলাব ছাত্র মোর্চা রিতেশ বিদ্যার্থী ও স্ত্রী সোনি আজাদের বাড়িতেও হানা দেয়। এদিন দম্পতিকে আটক করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা।
প্রসঙ্গক্রমে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের আইনজীবী কে.কে রায় জানান, যাদের বাড়িতে এনআইএ অভিযান চালিয়েছেন তাঁরা সকলেই উচ্চ-শিক্ষিত ও সম্মানীয় ব্যক্তি। স্বাভাবিকভাবেই অগণতান্ত্রিক ইস্যুতে প্রশ্ন তুলবেন। সারা বছর সাংবাদিক, লেখক, আইনজীবী, সমাজকর্মীদের নিয়ে মাতামাতি করলেও ভোট প্রক্কালে তাঁরা কেন্দ্র সরকারের চক্ষুশূল হয়ে যায়। তাই এহেন কর্মকাণ্ড চলতেই থাকে। এদিন ইলাহাবাদ, আজমগড়, বারাণসী এবং চান্দুয়ালিতে অভিযান চালায় এনআইএ।
পুলিশ আধিকারিক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানিয়েছেন, সমাজসেবার নামে বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে এনআইএ। এ ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছেন বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশ। মতামত প্রকাশের অধিকারের উপর ভয়াবহ আঘাত বলেও জানান তাঁরা। সূত্র – পুবের কলম পত্রিকা