রাজ্য

ক্যান্সারে কাটা পায়ে ধরেছে পচন, চিকিৎসার টাকা নেই, বিছানাতেই যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন নিখিল সরকার

রেবাউল মন্ডল, টিডিএন বাংলা, বহরমপুর: চার বছর ধরে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত। ডান পা টা আগেই কেটে বাদ দিতে হয়েছে। এখন সেই কাটা পা আবার পচে ফুলে উঠতে শুরু করেছে। সেখানে থেকে মূত্রনালীতে ছড়িয়ে পড়েছে ক্যান্সার। সেখানে প্লাস্টিকের পাইপ ঢুকিয়ে তার সাথে বাঁধতে হয়েছে একটি থলি। চিকিৎসার টাকা নেই। এই অবস্থায় বাড়িতেই রাতদিন ছটফট করছেন বহরমপুর গোরাবাজারের জমিদারি পাড়ার নিখিল সরকার। আর এই অসহ্য যন্ত্রনা সহ্য করে যাওয়া ছাড়া এখন আর কোন উপায় দেখছেন না তিনি।

নড়াচড়ার ক্ষমতা নেই। বিছানায় বসেই নিখিল সরকার জানালেন, ‘চার বছর ধরে ক্যান্সারে ভুগছি। বহু জায়গায় ছুটেছি। কলকাতার এনআরএস এ চিকিৎসার জন্য প্রায়ই যেতে হয়। চিকিৎসায় সব ফুরিয়ে এখন আমি নিঃস্ব। কাটা পা টা ফুলে এখন পচন ধরেছে। তলপেটে বড় অপারেশনও হয়েছে। যন্ত্রনায় রাতে ঘুমাতে পারিনা। অবিলম্বে চিকিৎসা দরকার। কিন্তু কলকাতা যে যাব সে পথ খরচটাও নেই।’

সুস্থ অবস্থায় শুকনো চা এর হকারী করে যা রোজগার হত তাতেই সংসার চলত বলে জানাচ্ছেন বছর বাহান্নর নিখিলবাবু। পরিবারে স্ত্রী ছাড়াও এক মেয়েও আছে। কিন্তু বর্তমানে রোজগারের কেউ নেই। ক্যান্সারের পর নিখিল বাবুর আয়ও বন্ধ। ফলে টান পড়েছে সংসারের নুন-তেলেও। সংসার চালাতে ‘দিদিকে বলো’তে স্ত্রীর জন্য একটা কাজ চেয়ে আজও পাননি বলেও অভিযোগ তার।

একমাত্র মেয়ে শ্রেয়শ্রী সরকার গোরাবাজার শিল্প মন্দির গার্লস হাই স্কুলের এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।
এদিকে কিভাবে মেয়েকে পড়াবেন, কিভাবে সংসার চলবে তা নিয়েও চিন্তার শেষ নেই পরিবারের। শ্রেয়সী বলছে, এতদিন বাবাই আমাকে পড়িয়েছেন। টিউশন লাগেনি। কিন্তু বাবার এই অবস্থায় আমি একাদশে উঠে পড়াশুনাটা চালিয়ে যেতে পারব কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

নিখিল বাবুর স্ত্রী নমিতা সরকার বলছেন, রোজ রাতে যন্ত্রনায় ছটফট করেন স্বামী। ওর চিকিৎসা দরকার। ওষুধও খেতে হয়। হাতে টাকা পয়সাও নেই। ওষুধটাও ঠিকমত কিনতে পারিনা। অন্যের সাহায্য নিয়েই কোন রকম খাওয়া দাওয়াটা হচ্ছে। কিন্ত এভাবে তো বাঁচা যায় না। আমি মাধ্যমিক পাস। সরকারিভাবে একটা কাজের ব্যবস্থা হলে ভাল হত।

নিখিলের প্রতিবেশী টিঙ্কু সেখ বলছেন, ওদের অবস্থা মোটেই ভাল নেই। প্রতিবেশী হিসেবে আমরাই মাঝে মাঝে দেখি। ওনার চিকিৎসা দরকার। ওর স্ত্রী যদি কোন একটা কাজ পেত সংসারটা দাঁড়াতে পারত।’ হরিদাসমাটি পঞ্চায়েত এর সদস্য খুরশেদ আলম বলেন, ‘পরিবারটি নিতান্তই অসহায়। আমরা সাধ্যমত সাহায্য করেছি।’

প্রতিবেশীরা আরও বলছেন, চিকিৎসা তো দূরের কথা, এই মুহূর্তে দুবেলা খাবারের সংস্থানও নেই ওদের। উপার্জনেরও কেউ নেই। পরিবারের আর সবাই তো কবেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

পরিবারের এই দুর্দিনে শ্রেয়সীর পড়াশুনার দায়িত্ত্ব কি কেউ নেবে? বাবার চিকিৎসার কি হবে? চিকিৎসা-ওষুধ তো দূরের কথা একটু খাবারের জন্য ওরা আর কতদিন চেয়ে থাকবে অন্যের আশায়? এভাবেই কি চলতে থাকবে? জানেনা নিরুপায় নিখিলের পরিবার।

কথা বলুন নিখিল বাবুর সঙ্গে 8348929648
মানবিক সাহায্য পাঠাতে পারেন
নিখিল বাবুর মেয়ের একাউন্টে

Name – Shreyashree Sarkar
A/c – 2072010121989
PUNJAB NATIONAL BANK
IFSC – PUNB0207220

Related Articles

Back to top button
error: