HighlightNewsদেশ

এটিএমে টাকা নেই, অমিল ওষুধ, পেট্রোল ২০০ টাকা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে নাজেহাল মণিপুর

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিল্লি ফিরে গিয়েও মণিপুর নিয়ে উদ্বিগ্ন অবস্থায় রয়েছেন। রবিবার তিনি আবেদন জানালেন জাতীয় সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য। দীর্ঘ অবরোধে মণিপুরে জীবনযাত্রা স্তব্ধ প্রায়। ২ নং জাতীয় সড়কে অবরোধ চলার দরুণ ইম্ফলে ট্রাক ও গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না। বাজারে দ্রব্যমূল্য দ্বিগুণ হয়ে পড়েছে। বহু পেট্রোল পাম্পে তেল নেই। আর যেখানে রয়েছে সেখানে লম্বা লাইন দিয়ে ২০০ টাকা লিটারে পেট্রোল কিনতে হচ্ছে। অমিত শাহ কয়েকদিন দাঙ্গা বিধ্বস্ত মণিপুরে ছিলেন সেই সময় সবপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত করেছিলেন পেট্রোল ডিজেলের সরবরাহ উত্তরপূর্বাঞ্চলের এই রাজ্যটিতে বাধাহীন থাকবে। প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহতে আর কোনও বাধা থাকবে না। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রত্যাবর্তনের পর অবস্থার তেমন কিছু পরিবর্তন হয়নি। কারফিউ শিথীল করা হয় কিছুক্ষণের জন্য। ব্যাংক ও বাজার খোলা হয়। কিন্তু জিনিসপত্রের আকাশচুম্বী দামে লাগাম পরানো সম্ভব হচ্ছে না। এটিএমে টাকা নেই তাই কার্ড নিয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে।

কারভিউ শিথীলের কয়েক ঘণ্টায় ব্যাঙ্কেও বেশি কাজ হচ্ছে না। দোকানে জীবনদায়ী ওষুধও পাওয়া যাচ্ছে না। চালের দাম ৩০ থেকে ৬০ টাকা। সবজির দাম দ্বিগুণেরও বেশি ৩৫ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। আলু ১৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা। আর ডিম ৬ টাকা থেকে ১০ টাকা। রান্নার তেল পৌঁছেছে ২৮০ টাকায়। মণিপুরের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত বিশেষ করে ইম্ফলবাসীদের নাভিশ্বাস উঠেছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় অনলাইন পেমেন্টও করা যাচ্ছে না। পাম্পে-পাম্পে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে পেট্রোল ডিজেল নিতে গিয়ে দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে তাদের।

মণিপুরে মেইতি ও কুকিদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুড়েছে ঘরবাড়ি, দোকান। বাসভূমি ছেড়ে বহুদূরে আশ্রয়শিবিরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন শান্তিতে থাকা মানুষগুলো। আশ্রয় শিবিরেও একই করুণ অবস্থা। খাদ্যসামগ্রীর স্টক শেষ হয়ে আসছে সব রিলিফ ক্যাম্পে। আয়োজকরা জানাচ্ছেন, সড়ক অবরোধ থাকলে গাড়ি শহরে ঢুকবে কীভাবে। বলা হচ্ছে, সেনায় মুড়ে দেওয়া হয়েছে মণিপুর। কিন্তু মানুষের দুর্ভোগ না কমে বরং বেড়েই চলেছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাদের যুক্তি, মণিপুরে যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল সেটা হল উভয়গোষ্ঠীর মধ্যে সদভাব তৈরির চেষ্টা করা। কিন্তু সে কাজ আদৌ হচ্ছে না। এখনও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চলছে। জঙ্গিদের টার্গেট করে আক্রমণ চলছে সেনাদের। লুঠ হয়ে যাওয়া অস্ত্র উদ্ধারে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে সেনা ও পুলিশ। কিছু কিছু মারণাস্ত্র উদ্ধার হলেও এখনও বহু অস্ত্র রয়েছে লুটেরাদের কাছে। পুলিশের গুদাম থেকে মারাত্মক অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পালিয়ে যায় এক দল মানুষ। আর তারপরই সেনার গুলিতে ৪০ জন কুকি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়। কুকিরা এখনও সমান সক্রিয় নিজ নিজ এলাকায়। বনধ অবরোধ অবশ্য মণিপুরের মানুষের কাছে নতুন কিছু নয়। কিন্তু এবার উভয়গোষ্ঠীর মানুষ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির শিকার হয়ে পড়েছেন। জ্বলন্ত মণিপুরে বোমা ও অস্ত্রের ঝলকানির মধ্যে এবার নতুন যোগ হতে যাচ্ছে মানুষের হাহাকার। সূত্র- পুবের কলম পত্রিকা

Related Articles

Back to top button
error: