চাকরি পাবার জন্য কাউকে এক পয়সাও নয়, কেউ চাইলে এফআইআর করুন; চাকরি প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

ছবি সৌজন্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজ।

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: চাকরি পাওয়ার জন্য কাউকে এক পয়সাও দেবেন না। যদি কেউ চায় তাহলে তার নামে এফআইআর করবেন। বনগাঁর গোপালনগর জনসভা থেকে রাজ্যেরযুব সম্প্রদায়ের কাছে তথা চাকরিপ্রার্থীদের কাছে এমনটাই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন ওই জনসভা থেকে চাকরির বিষয়ে সতর্ক করার পাশাপাশি বহিরাগতদের সম্পর্কেও সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, পাড়ায় পাড়ায় বহিরাগতরা ঢুকলে তাদের আটকান। বহিরাগতদের নামে এফআইআর করুন। এফআইআর না নিলে আমার কার্যালয় জানাবেন। শুধু তাই নয় রাজ্যের ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে নিউটাউনে আইটি সেক্টরে দুশো একরের সিলিকন ভ্যালি তৈরি করার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন তিনি।

এর পাশাপাশি হাই মাদ্রাসা উচ্চমাধ্যমিক পাঠরত সাড়ে ন’লক্ষ ছাত্র ছাত্রীর হাতে ট্যাগ তুলে দেওয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপন করার সাথেই তপশিলি পেনশন প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তপশিলিদের জন্য তপশিলি পেনশন চালু করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি পুরোহিতদের ভাতা দেওয়ার ঘোষণাও করেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, আইনের মধ্যে থেকে যা করা সম্ভব সে সবই করা হচ্ছে। রাজ্যের প্রতিটি বঞ্চনা আর লাঞ্ছনা চলছে। আট বছরে বাংলা যা করেছে তা উদাহরণযোগ্য। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প ও দুয়ারে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,স্বাস্থ্য বিমার জন্য দুয়ারে সরকার প্রকল্পে যেতে পারবেন। ঘূর্ণিঝড়ে কোনও টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। আমাদের টাকাই আমাদের আগাম দিয়েছিল।

তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের এবং কর্মসূচি প্রসঙ্গে মন্তব্য করার পাশাপাশি কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সিএএ, এনআরসি, কৃষক আন্দোলন ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিএএ, এনআরসি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,সিএএ করে প্রতারণার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের উদ্বাস্তু কলোনিগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছি। অন্য সব কলোনিগুলিকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রাজ্যে এনআরসি, এনপিআর করতে দেবোনা এই রাজ্যকে গুজরাত বানাতে দেব না।

কৃষক আন্দোলন প্রসঙ্গেও কেন্দ্রের মোদি সরকার কে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কৃষকদের জমি কেড়ে নিয়েছে। আগামীদিনে কৃষকরা কোথায় যাবে? গায়ের জোরে কৃষক বিরোধী তিনটি আইন করেছে। কৃষকরা যা তৈরি করে জোতদার, আড়তদাররা নিয়ে নেবে। কৃষকদের জীবনের আর কোনও দাম থাকবে না। কৃষকরা তাই আন্দোলন করছেন, আমরা পাশে আছি।

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ এর পাশাপাশি রাজ্যের প্রাক্তন শাসকদল সিপিএমের বিরুদ্ধেও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন,সিপিএম-এর হার্মাদরা বিজেপির ওস্তাদ হয়ে গেছে। বাইরে থেকে আরএসএস-এর গুন্ডা নিয়ে আসছে। শুধু তাই নয় এপ্রসঙ্গে মতুয়াদের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাইরে থেকে মানুষেরা এসে মতুয়াদের হিন্দুধর্ম শেখাচ্ছে। এরা বহিরাগত বাংলার লোক নয়। ক্ষমতা থাকলে রাজনৈতিক গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই করো। তিনি আরো বলেন,” মতুয়ারা সকলেই এদেশের নাগরিক। আপনাদের কোনো প্রমান পত্রের প্রয়োজন নেই। জন্মগতভাবে বাড়িতে একজন থাকলেই জাতিগত শংসাপত্র।”

পাশাপাশি আলু পেঁয়াজ ডাল সহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ও কেন্দ্রকে তুলোধোনা করতে ছাড়েননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন,আলু, পেঁয়াজ ডাল কিছুই আর অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নয়। মানুষের আর আলুসেদ্ধ-ভাত খাওয়ার সামর্থ্য থাকবে না। শীত পেরোলেই আলুর কেজি হবে ৫০ টাকা। পেয়াঁজের কেজি হয়ে যাবে ১৮০ টাকা।