টিডিএন বাংলা ডেস্ক : অনেক চেষ্টা করেও হল না শেষরক্ষা। বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অস্বস্তি বাড়িয়ে গরু পাচার মামলায় তাঁর করা আইনি রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। গরুপাচার কাণ্ডে তাঁর বিরুদ্ধে যাতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, সেই জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। এদিন উচ্চ আদালত তাঁর রায়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সিবিআইয়ের তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে চায় না আদালত। তবে একইসঙ্গে আদালত এটাও জানিয়ে দিয়েছে যে, অনুব্রত মণ্ডল চাইলে আগাম জামিনের আবেদন করতে পারেন।
হাই কোর্ট সিবিআই-এর থেকে জানতে চায়, ”ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব?” উত্তরে সিবিআই জানিয়ে দেয়, ”ভার্চুয়ালি সিবিআই-এর পক্ষে গরুপাচারের তদন্ত করা সম্ভব নয়।’ এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী এম ভি রাজু বলেন, ‘উনি যদি এতটাই আশঙ্কায় থাকেন, তা হলে কেন আগাম জামিনের আবেদন করেননি?’ উনি সব জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যে রোগের কথা বলা হচ্ছে, তার জন্য কেন মেডিক্যাল বোর্ড? তিনি প্রভাবশালী বলেই এসব সম্ভব।’ এরপরই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এদিন অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী কিশোর দত্তের উদ্দেশ্যে বলেন, ”এর আগে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় আমি প্রশ্ন তুলেছিলাম, সিবিআই কেন অনুব্রতকে দুর্গাপুরে ডাকছে? কেন নিজাম প্যালেসে ডাকছেনা? বারবার আদালত এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে সিবিআইয়ের হাত বেঁধে দেবে কেন? তদন্তের কী প্রয়োজন, তা কোর্ট কোন ভাবেই জানেনা। কোর্ট প্রাথমিক মতামত হচ্ছে অনুব্রত মণ্ডল নিজাম প্যালেসে গিয়ে সিবিআই-এর মুখোমুখি হোক।”
সিবিআই-এর তরফে অভিযোগ করা হয়, ”অনুব্রত মণ্ডল শারীরিক অসুস্থতার অভিযোগ ছুতো। তিনি স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ব্যক্তি নন। তিনি হাওড়ার জনসভায় যোগ দিছেন। তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছেন। ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ছবি সেই প্রমাণ দিচ্ছে। শুধু সিবিআই ডাকলেই অসুস্থতাকে ঢাল করছেন।” এর আগে এই মামলায় একাধিক সাক্ষ্যের বয়ানে অনুব্রত মণ্ডলের নাম উঠে আসে বলে জানা গিয়েছে। সেই কারণেই তাঁকে তলব করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু তলব পেলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বারবার সিবিআই হাজিরা এড়িয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য যে, গত ৭ মার্চ গরুপাচার কাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করে নোটিশ পাঠিয়েছিল সিবিআই। এরপর আবার ১৪ মার্চ অর্থাত্ সোমবার সকাল ১১টায় কলকাতার নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার জন্য অনুব্রতকে সমন পাঠানো হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সেই আবেদনকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে আইনি রক্ষাকবচ চেয়ে মামলা করেন অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু তাঁর সেই রক্ষা কবচের আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এখন তিনি চাইলে শুক্রবার আগাম জামিনের আবেদন করতে পারেন হাইকোর্টের অন্য বেঞ্চে।