আফগানিস্তানের মানবিক সংকট সমাধানে পাকিস্তানে ‘ওআইসি’র আন্তর্জাতিক সম্মেলন

ছবি সংগৃহীত

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : আফগানিস্তানের মানবিক সংকট সমাধানে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্স (ওআইসি) এর ডাকে পাকিস্তানে অতি জরুরি এক বৈঠকে মিলিত হল মুসলিম দেশগুলি। এদিনের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ‘ওআইসি’র সদস্যভুক্ত ৫৭টি দেশের বিদেশমন্ত্রীরা। বৈঠকে উপস্থিত হয়ে ‘ওআইসি’র সেক্রেটারি জেনারেল হুসেন ব্রহমি তাহা একটি ঘোষণায় বলেন, “আফগান ভাই-বোনেরা এখন চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছে। মুসলিম দেশগুলির উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো।”

রাষ্ট্রসংঘের বৈঠকের পর তালিবানের অধীন আফগানিস্তান নিয়ে এত বিশাল আয়োজন এই প্রথম। এই সম্মেলনের অন্যতম আকর্ষন ছিল আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির উপস্থিতি। কারণ ইতিপূর্বে যেহেতু তালিবানের সরকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি– সেকারণে রাষ্টসংঘের বৈঠকে তালিবান প্রতিনিধির উপস্থিতি ছিল না। আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বলেন, “আফগান অর্থ আটকে রাখার অর্থ সকল আফগান নাগরিকের সঙ্গে শত্রুতা এবং সুস্পষ্টভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা।” তিনি সকল মুসলিম দেশে আফগানিস্তানের দূতাবাস আবার চালু করার আহ্বান জানান। মুত্তাকি বলেন, “আমরা সকল মুসলিম দেশকে এই নিশ্চয়তা দিতে চাই যে, আফগানিস্তানে বর্তমানে একটি দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন ও প্রতিশ্রুতিশীল সরকার ক্ষমতায় রয়েছে।”

সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, “তালেবান ক্ষমতায় আসার আগে আফগানিস্তানের মোট বার্ষিক বাজেটের শতকরা ৭৫ ভাগ আন্তর্জাতিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল। হঠাৎ করে সেই সাহায্য বন্ধ করে দিয়ে উল্টো আমেরিকার পক্ষ থেকে আফগানিস্তানের বিশাল অঙ্কের অর্থ আটকে দেয়ার ফলে আফগানিস্তান বর্তমানে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।” পাশাপাশি তিনি আমেরিকার আফগানীতিকে ‘অনুপযুক্ত’ আখ্যা দিয়ে এই নীতির সমালোচনা করেন। একইসঙ্গে তিনি ওয়াশিংটনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আফগানিস্তানে অস্থিতিশীলতা চলতে থাকলে তাতে বিশ্বের কারো লাভ হবে না এবং এর ক্ষতি শুধুমাত্র পাকিস্তান ও ইরানে সীমাবদ্ধ থাকবে না। পাক প্রধানমন্ত্রী আফগান জনগণের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান।”

এদিন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান মন্তব্য করেন, “আফগানিস্তানের সমস্ত নৃগোষ্ঠী লোকজনের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠনের মধ্যদিয়েই কেবল মাত্র দেশটিতে টেকসই নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।”