নিজস্ব সংবাদদাতা, টিডিএন বাংলাঃ কলকাতার অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সেমিনার কক্ষে আসন্ন জনগণনা সংক্রান্ত একটি আলোচনা এবং মতবিনিময় সভায় মিলিত হন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি সমাজকর্মীরা। কেন্দ্রীয় সরকার গত ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে যেভাবে জাতিভিত্তিক জনগণনা করার বিরুদ্ধে মত দিয়েছে, তা ঠুনকো ও অযৌক্তিক বলে প্রত্যাখ্যান করা হয় এদিনের আলোচনা সভায়। একইসঙ্গে অভিযোগ করা হয় যে, আসলে মোদী সরকারের সামাজিক ন্যায় সুনিশ্চিত করার বিষয়ে কোন রাজনৈতিক সদিচ্ছা নেই। বরং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক দেশজুড়ে এনপিআর-এনআরআইসি প্রক্রিয়া চালিয়ে কয়েক কোটি মানুষকে ‘সন্দেহজনক নাগরিক’ বানাতে আগ্রহী। এর বিরুদ্ধে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলার স্বপক্ষেই মত দিয়েছেন আলোচনা সভার অংশগ্রহণকারীরা। মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ গ্রহণ করার ৩০ বছর এবং সাচার কমিটি রিপোর্টের ১৫ বছর পর সামাজিক বঞ্চনার শিকার, বাংলার দলিত, আদিবাসী, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি, মুসলিম সহ সংখ্যালঘু এবং মহিলাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, কৃষি-ব্যবসা-বাণিজ্য-ঋণ ইত্যাদি পরিস্থিতির বিস্তারিত সমীক্ষা চালিয়ে যথার্থ আর্থ-সামাজিক বিশ্লেষণ এবং মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা আলোচিত হয়েছে। এক্ষেত্রে জাতিভিত্তিক জনগণনার গুরুত্ব অপরিসীম বলে মনে করছেন তারা। এদিনের আলোচনা সভায় দাবি করা হয় যে, কেন্দ্রীয় সরকার সারা দেশে চালু না করলেও রাজ্য সরকার যেন অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে জাতিভিত্তিক জনগণনা সুনিশ্চিত করে একটি বহুজন কমিশন গঠন করে। এর আগে গত ৭ই সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে দাবি জানানো হয়, “আসন্ন সেন্সাসে জাতিভিত্তিক জনগণনা সুনিশ্চিত করতে হবে। NPR, NRC প্রক্রিয়াকে সেন্সাস থেকে বিযুক্ত করে বাতিল করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে বহুজন কমিশন গঠন করতে হবে।” এই আলোচনা সভার আহ্বায়করা জানান, “আমাদের দাবিগুলির ভিত্তিতে একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মঞ্চ গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে আগামী ১৩ নভেম্বর অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সেমিনার কক্ষে প্রস্তুতি সভা ডাকা হয়েছে।” এদিনের সভায় বিভিন্ন দাবিগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। উল্লেখ্য যে, বাংলা তথা ভারত জুড়ে আগামী আদমশুমারিতে বর্ণভিত্তিক জনগণনার দাবি উঠেছে বিভিন্ন সমাজকর্মী ও গণসংগঠন গুলির পক্ষ থেকে। এছাড়া বিভিন্ন রাজ্যের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ও তিনটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও বর্ণ ভিত্তিক জনগণনার পক্ষে সাওয়াল করেছেন।