টিডিএন বাংলা ডেস্ক: মহান শিক্ষাবিদ, অসাধারণ শিক্ষক ও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মবার্ষিকীতে ‘শিক্ষক দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সারাদেশের ৭৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে অসামান্য অবদানের জন্য মঙ্গলবার জাতীয় পুরস্কার প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। পুরস্কারপ্রাপ্ত এই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যেই একজন হলেন উত্তরপ্রদেশের আসিয়া ফারুকী। পুরস্কার পাওয়ার পর নিজের সংঘর্ষের কথা স্মরণ করে আসিয়া বলেন, “সেটা ছিল ২০১৬ সাল। পদোন্নতি পেয়ে আমি অস্তি গ্রামের প্রিন্সিপাল হয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌছই। গেট খুলে… ভিতরের অবস্থা দেখে চমকে উঠলাম। চারদিকে মদের বোতল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। শ্রেণীকক্ষের সামনে আবর্জনার স্তূপ। বাচ্চাদের খেলার মাঠে, পশুদের বেঁধে রাখার জন্য খুঁটি লাগানো রয়েছে। জায়গাটা স্কুলের থেকেও বেশি খাটালের মত লাগছিল।”
এরপর, ফতেপুর জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (অস্তি) অধ্যক্ষ আরো বলেন, “প্রথম দিনে মাত্র পাঁচটি শিশু স্কুলে এসেছিল। তাদের মধ্যে একজন ম্যাডামকে বলেছিল, স্কুল বন্ধ হওয়ার পরে, মাতালরা এখানে জুয়া খেলতে আসে। মহিলারা এখানে কাপড় ধুয়ে শুকানোর জন্য বাউন্ডারিতে টাঙিয়ে দেয়। স্কুলের অবস্থা খুব খারাপ। এতটাই জরাজীর্ণ যে মনে হয় হঠাৎ ছাদটা আমাদের ওপর ভেঙে পড়বে। আমি বাচ্চাদের ডেকে বললাম- আমি তোমাদের নতুন শিক্ষিকা। এখন থেকে স্কুল প্রতিদিন খুলবে… আমি সবাইকে পড়াব। এরপর আমি এমনিই বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম…ঠিক আছে, বলো তো তোমাদের রাজ্যের নাম কী? শিশুটি উত্তর দিয়েছিল… ‘ফতেপুর’।”
আসিয়া বলেন, “স্কুলে আমিই একমাত্র শিক্ষিকা ছিলাম। বাচ্চাদের অবস্থা দেখে আমি কান্না পেয়ে গিয়েছিল। আমি ভেবেছিলাম যে যাই ঘটুক না কেন, এই জায়গার জন্য আমাকে কিছু করতেই হবে। আজ ৬ বছর পার হয়ে গেছে… পাঁচ-এর পরিবর্তে, স্কুলে এখন ২৫০ জন শিশু রয়েছে। যে স্কুলে এক সময় সন্ধ্যায় মাতালদের জমায়েত হতো, আজ সেই স্কুলের শিক্ষিকাকে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার দিচ্ছেন।” মঙ্গলবার, শিক্ষক দিবসে, আসিয়া ফারুকী ছাড়াও উত্তরপ্রদেশের আরো দুই শিক্ষক চন্দ্র প্রকাশ এবং সুধাংশু শেখরকে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু জাতীয় শিক্ষক পুরস্কারে সম্মানিত করেছেন। সূত্র- হিন্দুস্থান গেজেট বাংলা