টিডিএন বাংলা ডেস্ক: সেনাবাহিনীতে নিয়োগের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন প্রকল্প “অগ্নিপথ”-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে বিহারে। গতকালই প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং “অগ্নিপথ” প্রকল্প ঘোষণা করেন। এর পরদিন অর্থাৎ বুধবার থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়।
জানা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা বক্সারে রেলপথ অবরোধ করেন এবং মুজাফফরপুরের মাদিপুরে আগুন লাগিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। পাশাপাশি আরাতেও ব্যাপক তোলপাড় হয়। পুলিশ এবং জিআরপির তরফে বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও তাঁরা অগ্নিপথ প্রকল্প প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় রয়েছেন।
অগ্নিপথ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের তরফে প্রশ্ন করা হলে, প্রাক্তন সেনাপ্রধান ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেনারেল ভি কে সিং বলেন, যখন কিছু নতুন প্রকল্প আসে সেসম্পর্কে ততক্ষণ পর্যন্ত কিছু জানা যায় না যতক্ষণ না সেটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। যে দলটি এই পরিকল্পনা করেছে আমি তার অংশ নই, আমি এটি সম্পর্কে খুব বেশি জানি না। প্রকল্পটি সবেমাত্র ঘোষণা করা হয়েছে, দেখা যাক সময়মতো কী হয় আর কী হয় না।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্র সরকার গতকাল ১৪ জুন সেনা, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর তিনটি শাখায় বিপুল সংখ্যক যুবকদের নিয়োগের জন্য ‘অগ্নিপথ’ নিয়োগ প্রকল্প শুরু করেছে৷ এই প্রকল্পের অধীনে, যুবকদের ৪ বছর প্রতিরক্ষা বাহিনীতে চাকরি করতে হবে। বেতন ও পেনশনের বাজেট কমাতেই সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে বুধবার মুজাফফরপুরে সেনা রিক্রুটমেন্ট অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ। লাঠি হাতে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে হট্টগোল ও বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রথমে বিক্ষোভকারীরা আর্মি রিক্রুটমেন্ট অফিসে যান। সেখানে বিক্ষোভ দেখানোর পর মাদিপুরে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। এর পাশাপাশি সড়কের আশপাশের বোর্ড ও হোর্ডিং-ও ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়।
বিক্ষোভকারীদের বোঝাতে সদর ও কাজী মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তাঁরা বিক্ষোভ থামাতে রাজি হন না। আন্দোলনকারীদের দাবি, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো সেনা কর্মকর্তা তাদের সমস্যার কথা না শুনবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা পথ ছাড়বেন না।
বিক্ষোভকারীরা বক্সার স্টেশনের গুদামের কাছে দিল্লি-কলকাতা রেলপথ অবরোধ করলে ঘটনাস্থলে রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স, রেলস্টেশন, বক্সার সহ সিটি থানা ও রেলওয়ে ম্যানেজার পৌঁছেন। আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করে অবরোধ তোলা হয়।
আন্দোলনকারীরা বলেন,”নেত্রী বা বিধায়ক, সবাই ৫ বছর সময় পান, ৪ বছরে আমাদের কী হবে। আমাদের পেনশনের সুবিধাও নেই। ৪ বছর পর আমরা পথে বসব।” তাঁদের দাবি, সেনাবাহিনীতে নিয়োগের এই পরিকল্পনা বাতিল করা উচিত।
বেগুসরাইয়ের হর হর মহাদেব চকের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক পুরোপুরি অবরুদ্ধ করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি অগ্নিপথ প্রকল্পে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে পুরনো পদ্ধতিতেই নিয়োগ করা হোক। একইসঙ্গে বয়সে ২ বছর ছাড় দেওয়ার দাবিও জানানো হয়। পাশাপাশি সিইই পরীক্ষার প্রক্রিয়া যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুরু করা এবং যত দ্রুত সম্ভব এয়ার ফোর্স এয়ারম্যানের ফলাফল প্রকাশ করার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।