টিডিএন বাংলা ডেস্ক : কেউই হারতে চায় না। কেউ ইচ্ছা করে ভুল করেন না। কিন্তু কখনো কখনো সবটা হয়ে ওঠে না। ঠিক এমনটাই হয়েছে তিন ইংলিশ ফুটবলার মার্কুস র্যাশফোর্ড, জ্যাডন সাঞ্চো ও বুকায়ো সাকার ক্ষেত্রে। ঘরের চেনা মাঠে ভরা গ্যালারিতে তিন জনই টাইব্রাকারে গোল দিতে ব্যর্থ।
পেনাল্টি শুট আউটে ওয়েম্বলিতে ইতালির কাছে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছে ইংল্যান্ডের। যেখানে তিনটি শট মিস করেছেন ইংলিশ ফুটবলার মার্কাস রাশফোর্ড, জাদো সানচো, বুকায়ো সাকা। এই তিন ফুটবলারই কৃষ্ণাঙ্গ।
ব্রিটিশ দর্শকরা বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃষ্ণাঙ্গ বলে নানাভাবে সমালোচনা করা হচ্ছে।
ফাইনাল শেষে ইংল্যান্ড দলের এ তিন অশ্বেতাঙ্গ ফুটবলারকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্ণবাদী হেনস্তা করে ইংলিশ সমর্থকরা।
যদিও এই বিষয়ে ইংল্যান্ড সরকার কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। যারা এমন কাজ করছেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলছে মেট্রোপলিটন পুলিশ।
ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীও বরিস জনসনও ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে তিনি লেখেন, ‘ইংল্যান্ড দলের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্ণবাদমূলক মন্তব্য করা নয়, বরং তাঁদের নায়কের সম্মান জানানো উচিত। যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের নিজেদের ওপর লজ্জা হওয়া উচিত।’
This England team deserve to be lauded as heroes, not racially abused on social media.
Those responsible for this appalling abuse should be ashamed of themselves.
— Boris Johnson (@BorisJohnson) July 12, 2021
এ নিয়ে ইংলিশ ফুটবল সংস্থার (এফএ) বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই জাতীয় জঘন্য আচরণ করছে যারা তাদেরকে দল স্বাগত জানায় না।’ তবে ম্যাচ শেষে সাকা-সানচো-রাশফোর্ডের সাহসের প্রশংসাই করছেন বোদ্ধা বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ ফুটবলাররা। ইংল্যান্ড দলের কোচ বলেছেন, এর দায় খেলোয়াড়দের নয়। ট্রাইব্রেকারে কারা শট নেবে তা নির্বাচন করেছেন তিনি নিজেই। অনুশীলনে নৈপুণ্যের ভিত্তিতেতেই তিনি তা সাজিয়েছিলেন।
এফ এ আরও জানায়, ‘বর্ণবাদী আচরণের পেছনে কারা আছে আমরা এখনও পরিস্কার না। এমন আচরণ কখনোই কাম্য নয়। দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির আহ্বান জানিয়ে আমরা খেলোয়াড়দের সমর্থন করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবো।’
এদিকে লন্ডন মেয়র সাদিক খান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান করেছেন এসব মুছে দেওয়ার জন্য।
এর মধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষ্ণাঙ্গ নেতৃত্ব সহ খেলোয়াড়রা এদের পাশে দাড়িয়ে বার্তা দিতে শুরু করেছে। ক্রোয়েশিয়া জাতীয় দলের তারকা এবং লিভারপুলের সাবেক ডিফেন্ডার দেয়ান লভরেন টুইটারে লিখেছেন, ‘ সাবাশ ইংল্যান্ড। তোমরা গর্বিত জাতি হওয়া উচিত। সাকা চিন্তা করো না। তুমি বেশ সাহস দেখিয়েছো এবং ভালোও করেছো। এটা তোমার দোষ নয় একদমই। তুমি একজন সেরা খেলোয়াড়।’
রোববার ট্রাইব্রেকারে সাকা পেনাল্টি মিস করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ১৯ বছর বয়সী এই ইংলিশ উইংগারের ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে বানরের ইমোজিতে সয়লাব হয়ে যায়।
পরে এফএ’র বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা খেলেয়াড়দের সমর্থনে সবকিছু করবো। দায়ীদের শাস্তির মুখোমুখি করবো। আমরা খেলোধুলা বর্ণবাদ বিতারিত করতে চাই। এজন্য সরকারকে দ্রুত এ জন্য আইন প্রনয়ণ করতে বলেছি। এজন্য সামাজিক যোযোগমাধ্যম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোরও এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’