টিডিএন বাংলা ডেস্ক : বিজেপি–শাসিত রাজ্য উত্তরাখন্ডের রুরকির ধর্ম সংসদ নিয়ে এবার কঠোর মনোভাব পোশন করলো সুপ্রিম কোর্ট। এই সংক্রান্ত একটি মামলায় মঙ্গলবার রাজ্য সরকারকে সুপ্রিম কোর্ট হুঁশিয়ার করে দেয় ‘হিন্দু ধর্ম সংসদে’ মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোনো রকম ঘৃণা ভাষণ বা ‘হেট স্পিচ’ যেন শোনা না যায়। এর অন্যথা হলে অর্থাৎ ধর্ম সংসদে ঘৃণা ভাষণের কোনো ঘটনা ঘটলে রাজ্যের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও অন্য পদস্থ কর্তা তার জন্য দায়ী থাকবেন বলেও সতর্ক করে দেন বিচারপতি এ এম খানউইলকর, বিচারপতি অভয় শ্রীনিবাস ওকা এবং বিচারপতি সি টি রবিকুমারের বেঞ্চ। আদালত উত্তরাখন্ডের ডেপুটি অ্যাডভোকেট জেনারেল যতীন্দ্র কুমার শেঠিকে বলেন, ‘সরকারকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। হেট স্পিচ কী করে রুখতে হয়, তা আপনাদের জানা আছে।’ উত্তরাখন্ড ধর্ম সংসদ মামলায় আবেদনকারীদের আইনজীবী ছিলেন কপিল সিব্বাল।
এরপরই উত্তরাখণ্ড পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, রুরকিতে কোনও ধর্ম সংসদের অনুমতি দেওয়া হবে না। একটি দক্ষিণপন্থী সংগঠন ওই ধর্ম সংসদের আয়োজন করেছিল। রুরকিতে যেখানে ধর্ম সংসদ আয়োজনের কথা ছিল, সেই জায়গাটি পুলিশ ঘিরে রেখেছে। রুরকি এলাকার পদস্থ পুলিশ অফিসার যোগেশ রাওয়ত বলেন, ‘‘যেখানে ধর্ম সংসদ হওয়ার কথা ছিল, সেখানে ২০০ কনস্টেবল ও হেড কনস্টেবল, শতাধিক ইনস্পেক্টর ও সাব-ইনস্পেক্টর মোতায়েন করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে শৈথিল্য দেখানোর প্রশ্ন নেই।’’
সম্প্রতি হরিদ্বার-সহ দেশের বেশ কিছু জায়গায় ধর্ম সংসদ থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উস্কানি ও বিদ্বেষমূলক ভাষণের অভিযোগ উঠেছে। সেখানে মুসলমানদের গণহত্যার ডাকও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। চলতি মাসের শুরুতে হিমাচল প্রদেশেও ধর্ম সংসদে ঘৃণার ভাষণ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই সংক্রান্ত অপর একটি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট হিমাচল প্রদেশে কিছুদিন আগে আয়োজিত ওই ধর্ম সংসদে দেওয়া হেট স্পিচ নিয়ে রাজ্য সরকারকে তিরস্কার করেন। সেখানে মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের হিংসাত্মক হওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে ঘৃণা ভাষণ রুখতে আদৌ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছিল কি না, তা আগামী ৭ মের মধ্যে জানাতে হবে। পাশাপাশি হিমাচল প্রদেশ সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে আদালত তার রায়ে বলে, এমন আয়োজন নিশ্চয়ই হঠাৎ করে করা হয়নি। আগে থেকে ঘোষণা করে এই ধরনের সম্মেলনের করার পরেও সরকার কেন ঘৃণা ভাষণ রুখতে ব্যর্থ? বিশেষ করে এ–সংক্রান্ত গাইডলাইন যখন সুপ্রিম কোর্ট আগেই বেঁধে দিয়েছেন?