রাজ্য

বাংলায় হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের নেতা,’সময়ের বিবেক’ পার্থ সেনগুপ্তের মৃত্যুতে বিভিন্ন জনের বিবৃতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, টিডিএন বাংলা, কলকাতা: আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের পক্ষ থেকে পার্থসেনগুপ্তকে ‘সময়ের বিবেক ও জাতির মূল্যবোধের প্রতীক’ বলে অভিহিত করা হয়।

লেখক চিত্ত মন্ডলের মন্তব্য,বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই । পার্থ দার সঙ্গে আমাদের অনেক অনেক স্মৃতি। খুব মন খারাপ হয়ে গেল।

বুদ্ধ ধর্মাঙ্কুর সভার সভাপতি হেমেন্দু বিকাশ চৌধুরী বলেন,’ পার্থ সেনগুপ্ত ধর্মান্ধবিরোধী ও বিদ্যাসাগর চর্চায় অবদানের জন্য অমর হয়ে থাকবেন।

জামায়াতে ইসলামী হিন্দের রাজ্য সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুর রফিক ফেসবুকে লেখেন,’বিশিষ্ট সমাজসেবী, বিশ্বকোষ পরিষদের চেয়ারম্যান, সদ্ভাবনা মঞ্চের সভাপতি আমদের সকলের প্রিয় ও শ্রদ্ধাভাজন পার্থ সেনগুপ্ত মহাশয় আর আমাদের মাঝে নেই। আজ ভোর ৩.৩০ মিনিটের কাছাকাছি সময়ে তিনি প্রয়াত হন। তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা রইল। জামাআতে ইসলামী হিন্দ তাঁর এক ভালো বন্ধু ও সুভানুদ্ধায়ীকে হারালো।’

সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান এক বিবৃতিতে বলেন,’লেখক ও সমাজকর্মী পার্থ বাবুর সঙ্গে মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের একটা আত্মিক সম্পর্ক ছিল। নিজহাতে গড়া বিশ্বকোষ পরিষদের মাধ্যমে মুসলিম মনীষদের নিয়ে বহু গবেষণাধর্মী কাজ করেছেন। প্রকাশ করেছেন মনিষীদের নিয়ে বহু গ্রন্থ।
আমি পার্থ সেনগুপ্তের মাধ্যমেই চিনেছিলাম সাহিত্যিক ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর আমার এলাকা হাড়োয়ার জন্মভিটা। তাঁর কাছেই প্রথম শুনেছিলাম দেগঙ্গার শিক্ষানুরাগী ছাওলাতুন্নেছার দানের ইতিবৃত্ত। স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা বীরত্বের ইতিহাস, দানবীর হাজী মুহাম্মদ মহসিন শিক্ষা আন্দোলন, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াতের নারী শিক্ষা আন্দোলনের অবদান নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে আজীবন তিনি চেষ্টা করে গেছেন।
পার্থ বাবুর এই মহত্বপূর্ণ কাজের জন্য আমাদের ফ্রন্টপেজ অ্যাকাডেমি ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ স্মৃতি সম্মান ও প্রতিষ্ঠানের ফ্রন্টপেজ লাইফ টাইম এ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পৃথক দুটি সম্মানে ভূষিত করে।’

বিশিষ্ট লেখক মুহাম্মদ নূরুদ্দিন জানান, রোকেয়া ও বিদ্যাসাগর চর্চার ক্ষেত্রে পার্থসেনগুপ্তের অবদান বাঙালি মনে রাখবে। সংহতির আন্দোলনের তিনি অগ্রণী নায়ক ছিলেন। বঞ্চিত সমাজের হয়ে তিনি বরাবরই লড়েছেন।
আমানত ফাউন্ডেশনের ডাইরেক্টর মুহাম্মদ শাহ আলম জানান,”আমরা অত্যন্ত মর্মাহত যে, পার্থদা অর্থাৎ পার্থ সেনগুপ্ত আর ইহজগতে নেই। আজ ভোর তিনটেয় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোকগমন করেছেন। তাঁর মত একজন সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী, সংখ্যালঘু সমাজের প্রকৃতবন্ধু ও পিছিয়ে-পড়া এবং বঞ্চিত মানুষের দরদী অভিভাবক আজ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন।

পশ্চিমবঙ্গ তথা দেশের তিনি ছিলেন একজন বরেণ্য সমাজকর্মী তথা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল প্রতীক।
সবসময় জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে এই দেশ তথা রাজ্যের গুণী এবং সংস্কৃতিবান মানুষদেরকে জাগিয়ে তোলার এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন একজন অতন্দ্র প্রহরী।

বিশ্বকোষ পরিষদ-এর মাধ্যমে সমাজের উপেক্ষিত ও হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিত্ব ও কর্মকান্ডকে মানুষের মাঝে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি ছিলেন নিরলস।

আমরা তাঁর প্রয়াণে ব্যথাহত। তাঁর শোকাহত পরিবার ও তাঁর গুণমুগ্ধদের সাথে সমব্যথী। শোক ভারাক্রান্ত হৃদয়ে।’

Related Articles

Back to top button
error: