টিডিএন বাংলা ডেস্ক : ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে যে সমস্ত বাঙালি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ না করেই ইউক্রেন থেকে ফিরে এসেছেন তারা এই রাজ্যেই কোর্স শেষ করার সুযোগ পাবেন। শুধু তাই নয় তারা একইসঙ্গে আর্থীক সহ অন্যান্য কিছু সুজগ-সুবিধাও পাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। আজ ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ইউক্রেন ফেরত ৩৯১ জন ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এদিন ইউক্রেন ফেরত বাঙালি পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তাদের দুশ্চিন্তা দূর করার আশ্বাস দেন মমতা। এই বৈঠকে ইউক্রেন ফেরত ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের কর্তাদেরও ডেকে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এই সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক টেনশন, অনেক দুঃসময়, ক্রাইসিস ফেস করে ইউক্রেন থেকে আপনারা ফেরত এসেছেন। পরিবারের লোকজনের চিন্তার শেষ ছিল না। তাঁরা তো ভাবতেই পারছিলেন না কীভাবে সন্তানদের ফেরত আনবেন।’
ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রের এই বৈঠক থেকেই তাদের কাছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান এই মুহূর্তে পড়ুয়ারা কী চাইছেন। উত্তরে কেউ বলেন অর্থনৈতিক সাহায্য চান বাইরের দেশে পড়তে যেতে। আবার কেউ জানিয়েছেন বাংলায় পড়ার সুযোগ দিলেও এই মুহূর্তে বেসরকারি কলেজে পড়ার ক্ষমতা নেই, তাই খরচের সীমা বেঁধে দিক রাজ্য। মমতা তাদের থেকে জানতে চান তারা এই রাজ্যে থেকে পড়াশোনা করতে চান। প্রত্যেক পড়ুয়াই তাতে সমর্থন জানান। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, ইউক্রেন ফেরত মেডিক্যাল পড়ুয়াদের রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পড়ার সুযোগ দেবেন। এদিন মমতা জানিয়েছেন, ইন্টার্ন ১১ জনই রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ইন্টার্নশিপের সুযোগ পাবেন। তাঁদের স্টাইপেন্ডও দেওয়া হবে। প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা নতুন করে সরকারি ও বেসরকারি কলেজে পড়ার সুযোগ পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি’র কথা উল্লেখ করে মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে রাজ্যের সুবিধাগুলির অনুমোদন চাওয়া হবে। আমরা চাইছি বাকি রাজ্যগুলির পড়ুয়াদেরও এরকম সুবিধা দেওয়া হোক।’ এরপর পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তোমরা ভাল ডাক্তার হবে, গ্রামেগঞ্জে চিকিত্সা করবে, মানুষকে পরিষেবা দেবে। এর থেকে বড় পাওনা আর কী হতে পারে!’
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদেরও রাজ্যে পড়ার সুযোগের কথা ঘোষণা করেন তিনি। একইসঙ্গে ঘোষণা করেন খরচের বিষয়ে সীমা বেঁধে দেবে রাজ্য। বিভিন্ন বেসরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যারা রাজ্যের বেসরকারি কলেজে পড়াশোনা করবেন তাদের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার ৫০ শতাংশ টাকা দেবে। এছাড়া ‘স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডে’র সুবিধাও পাবেন এঁরা। তার মাধ্যমে ঋণও নেওয়া যাবে। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সবাইকে এখানে ব্যবস্থা করা হবে, যাতে তাঁরা এখানেই পড়া চালিয়ে যেতে পারেন। আমরা চেষ্টা করব যাতে সরকারি বা বেসরকারি কলেজে সবার ব্যবস্থা করতে।’ মমতার ঘোষণা শুনে দুশ্চিন্তায় ভোগা পড়ুয়ারা উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন।