নেপালকে ৩-০ উড়িয়ে অষ্টম বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন ভারত, লিওনেল মেসিকে স্পর্শ সুনীল ছেত্রীর

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: অষ্টমবার সাফ চ্যাম্পিয়ন ভারত। শনিবার রাতে মালেতে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে সাফ কাপ জিতল ইগর স্টিমাচের দল। ভারতের তিন গোলদাতা সুনীল ছেত্রী, সুরেশ সিং ওয়াংজাম এবং সাহাল আব্দুস সামাদ। ছ’বছর পর আবার সাফ কাপ চাম্পিয়ন ভারত। ২০১৫ সালে স্টিফেন কনস্টেনটাইনের কোচিংয়ে শেষবার এই টুর্নামেন্ট জিতেছিলেন সুনীলরা। জিরি পেসেক (১৯৯৩), স্টিফেন কনস্টেনটাইনের (২০১৫) পর তৃতীয় বিদেশি কোচ হিসেবে সাফ কাপ জিতলেন ইগর স্টিমাচ।
জয়ের পাশাপাশি আরও একটি মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেললেন সুনীল। এদিন সুনীল ছেত্রী কেরিয়ারের ৮০তম আন্তর্জাতিক গোলটি পেলেন। ফের ধরে ফেললেন লিওনেল মেসিকে। বর্তমানে যেসব ফুটবলাররা খেলছেন তাঁদের মধ্যে মেসি ও সুনীল হলেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে যুগ্ম দ্বিতীয় সর্বাধিক গোলদাতা। পুরুষদের মধ্যে সর্বাধিক আন্তর্জাতিক গোলের রেকর্ডটি রয়েছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর দখলে। অ্যাকটিভ গোলস্কোরারদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে এককভাবে উঠে এসেছিলেন মেসি। তাঁকে ফের ধরে ফেললেন ভারত অধিনায়ক। যদিও আগের বার মলদ্বীপের কাছে হেরে রানার্স হয়েছিল ভারত। এবার ট্রফি না পেলেও প্রথমবারের মতো রানার্স আপের গৌরব অর্জন করল নেপাল।


এদিন আগাগোড়াই দাপট ছিল ভারতের। আরও বড় ব্যবধানে জিততে পারতেন মেন ইন ব্লু-রা। ম্যাচের ২৭ মিনিটে প্রথম পজিটিভ সুযোগ ভারতের। বাঁ দিক থেকে অনিরুদ্ধর বাড়ানো বল থেকে সুনীলের শট বাঁচিয়ে দেন নেপাল কিপার কিরণ লিম্বু। তার তিন মিনিটের মাথায় আবার সুযোগ। সেই অনিরুদ্ধর পাস থেকে। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি মনবীর। ৩০ মিনিটের মাথায় পাঞ্জাব স্ট্রাইকার হয়ে সুরেশের পা ছুঁয়ে সুনীলের হেড একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বিরতির ঠিক আগে গোলের সুযোগ মিস করেন ভারত অধিনায়ক। ৭০ শতাংশ বল পজেশন ভারতের থাকলেও গোলমুখ খুলতে পারেননি স্টিমাচের দল। বিরতিতে স্কোরলাইন গোলশূন্য। বৃষ্টি ভেজা সাফ কাপের ফাইনালে ম্যাচের রাশ নিজেদের পায়ে রেখেও গোল পাওয়ার জন্য ভারতীয় দলকে ৪৮ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল। ডানদিক থেকে প্রীতম কোটালের সেন্টারে মাথা ছুঁইয়ে দলকে এগিয়ে দেন অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী ৷ আর্ন্তজাতিক ফুটবলে দেশের জার্সিতে ৮০তম গোল করে লিওনেল মেসিকে স্পর্শ করলেন তিনি। প্রথম গোলের এক মিনিট পরেই দ্বিতীয় গোল ভারতের। এবার গোলদাতা সুরেশ সিংহ। এরপরও একাধিকবার গোলের সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি সুনীলরা। নয়ত অন্তত হাফ ডজন গোলে জিততে পারতেন স্টিমাচের দল। ম্যাচের অন্তিমলগ্নে ভারতের হয়ে তিন নম্বর গোলটা করেন সাহাল। টুর্নামেন্টের শুরুটা নড়বড়ে হলেও দ্বাদশ বার সাফ কাপের ফাইনালে উঠেছিল ভারত। রেকর্ড সংখ্যকবার সাফের ফাইনাল খেলার নজির নেই অন্য কোনও দেশের। বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আটকে যাওয়ার পর নেপাল ও মালদ্বীপের বিরুদ্ধে জোড়া জয় দিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছেছিলেন সুনীলরা। সাতবার সাফ কাপ জেতার নজির ছিল ভারতের। এই প্রতিযোগিতায় বরাবরই ফেভারিট ব্লু টাইগার্সরা। প্রতিপক্ষ নেপালের বিরুদ্ধেও বরাবরই রেকর্ড ভাল ভারতের। এর আগে মোট ২২ সাক্ষাতে ১৫ বার জিতেছিল ভারতীয় দল। সেখানে মাত্র দু’বার জিতেছে নেপাল। এই প্রথমবার সাফ কাপের ফাইনালে উঠছিল গোর্খারা। কিন্তু অভিষেকে বাজিমাত হল না। ট্রেন্ড বজায় রেখে আরও একবার সাফ চ্যাম্পিয়ন ভারত। একই সঙ্গে সাফ কাপ জিতে এ বারের মতো চাকরিও বাঁচিয়ে নিলেন ক্রোয়েশিয়ার প্রাক্তন বিশ্বকাপার। এর আগে ভারত সাফ চ্যাম্পিয়ন হয় ১৯৯৩, ১৯৯৭, ১৯৯৯, ২০০৫, ২০০৯, ২০১১ ও ২০১৫ সালে। রানার্স হয় ১৯৯৫, ২০০৮, ২০১৩ ও ২০১৮ সালে।