শীতলকুচির ঘটনা বুমেরাং হতে পারেঃ আতঙ্কিত বিজেপি
টিডিএন বাংলা ডেস্কঃ চতুর্থ পর্যায়ের নির্বাচনে কুচবিহার জেলার শীতলখুচি ১২৬ নম্বর বুথে শান্তিরক্ষী বাহিনীর গুলিতে পাঁচজন যুবকের মৃত্যু হওয়ায় দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।গণতন্ত্রের উৎসব এভাবে রক্তাক্ত হওয়ায় মানতে পারছেনা শান্তিকামী সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে। সমালোচনার থেকে বাদ যাচ্ছেনা নির্বাচন কমিশনও। আত্মরক্ষা করতে মাঠে নেমেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে অমিত শাহর মত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দিলীপ ঘোষ হুমকি দিয়ে বলেছেন “আরো শীতলকুচি হবে”। কিন্তু বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা এটা বিজেপির হতাশারই বহিঃপ্রকাশ। গায়ের জোরে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে গণতন্ত্র লুট করার ফল ভালো হবে না বলেই মনে করেন অনেকে।
বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি নৃপেন দাস বলেন, ‘রাজনীতি ও নির্বাচন এমন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, শান্তিপ্রিয় মানুষ এখন মুক্তি চাইছেন। কী এমন ঘটনা ঘটেছিল, যে গুলি করে মানুষকে মারতে হল? পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তো কোমরের নীচে গুলি করা যেত!’ নৃপেনবাবু আরও বলেন, ‘দিল্লি থেকে বিজেপির একের পর এক নেতা এসে আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিচ্ছেন। মাইন্ড গেম চালাচ্ছেন। এর মধ্যেও মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ রয়েছেন দেখে আশ্চর্য হচ্ছি। লড়াইটা রাজনীতির ময়দানে হওয়া উচিত। এ ধরনের হত্যা মেনে নেওয়া যায় না। শনিবারের ঘটনায় যা হল, তাতে বিজেপির ক্ষতি হবে।’
ইংলিশ বাজারের তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের মানুষ ব্যালটেই এর জবাব দেবে।’ ইসলামপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌম্যরূপ মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘যারা বদমায়েশি করছে বা করার পরিকল্পনা করছে, তারা যাতে সাবধান হয়ে যায়, সেটাই করা হয়েছে।’ আবার বিজেপির অন্যতম নেতা মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘চতুর্থ পর্যায়ে পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই।’ আরএসপির জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, ‘বিজেপি গণতন্ত্র শেষ করে দিয়েছে। ভোট দিতে যাওয়া নিরীহ মানুষকে গুলি খেয়ে মরতে হবে কেন?’ বালুরঘাটের এক চিকিৎসক সৌরভ কুণ্ডু কিন্তু আতঙ্কিত। বলছিলেন, ‘এভাবে গুলি চললে মানুষ ভোট দেবেন কীভাবে? নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে কাজ হলে প্রাণগুলো যেত না।’ বালুরঘাটের মঙ্গলপুরের বাসিন্দা বাণেশ্বর পালের সাফ কথা, ‘এখন তো ভোট দিতে যেতেই ভয় লাগছে।’ জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের এক ব্যবসায়ী সুখেন রায় বলেন, ‘এ তো রীতিমতো বিজেপির গা জোয়ারি!’ গোয়ালপোখরের তৃণমূল প্রার্থী গোলাম রব্বানি কিন্তু নিশ্চিত, যারা ভেবেছিল বিজেপিকে ভোট দেবে, তারা এখন আর দেবে না।