HighlightNewsরাজ্য

সব সম্প্রদায়ের ছাত্রীদের জন্যই খোলা মৌলানা আজাদ কলেজ মহিলা হস্টেলের দরজা

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: আলিয়ার তালতলা ক্যাম্পাসের ঠিক বিপরীত দিকে একটি সাইনবোর্ড । তাতে লেখা , মৌলানা আজাদ কলেজ মহিলা হস্টেল । সেখান থেকে খানিকটা ভিতরে প্রবেশ করলেই বড় কালো গেট। ভিতরে জি-প্লাস থ্রি বিল্ডিং। নীল সাদা রং। মনোরম পরিবেশ। ভিতর ঝাঁ চকচকে, টাইলস দিয়ে প্রতিটি ফ্লোর সুসজ্জিত। আসন সংখ্যা ৬৮। সবার জন্য উন্মুক্ত মৌলানা আজাদ কলেজের গার্লস হস্টেল। কর্মীদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তাঁরা এই হস্টেলে থাকতে পেয়ে খুশি। কাটোয়ার বাসিন্দা মৌলানা আজাদ কলেজের অঙ্কের তৃতীয়বর্ষের ছাত্রী প্রত্যুষা বসাকের কথায় , এই হস্টেলের খুব ভালো সুবিধা রয়েছে। একই ঘরের মধ্যে সব সম্প্রদায়ের ছাত্রীরা রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কালিংপং-এর বাসিন্দা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেহা সার্কির কথায়, ফাইভ স্টারের মতো লাগে। বাথরুমে গিজারের ব্যবস্থাও রয়েছে। শিলিগুলির রিতু সাহা, বাঁকুড়া সানুজা ফিরদৌসির বক্তব্য, আমরা এক সঙ্গে থাকি, কোনও অসুবিধা হয় না। যে যার মতো থাকে। দক্ষিণ দিনাজপুরের আমেনা খাতুন, নদিয়ার তাহেরা খাতুনরা বলেন, তারা পাঁচ মাস ধরে এখানে রয়েছে, পরিবারের মতোই এখানকার পরিবেশ। এই প্রথম পরিবার থেকে দূরে এসেছি। তাঁদের আরও বক্তব্য, হস্টেল ফি বেশি দিতে হয় না। বছরে মাত্র ১৩৫৮ টাকা। খাওয়ার জন্য হস্টেল-ডেলিভারি ক্যান্টিন রয়েছে। হস্টেলের তদারকিতে রয়েছেন তারিখ আলি নাইয়ার। তাঁর ব্যবহারে মুগ্ধ সকল আবাসিকরা।

উল্লেখ্য, মৌলানা আজাদ কলেজের ছাত্র সংগঠনের ছেলেদের দাবি ছিল একটি গার্লস হস্টেল প্রয়োজন। সেই দাবি অনুসারে সংখ্যালঘু মেয়েদের জন্য গার্লস হস্টেল করা হয়েছিল। এর জন্য ২ কোটি ৭৮ লক্ষের বেশি টাকা বরাদ্দ করে উচ্চ শিক্ষা দফতর। সাংসদ তহবিল থেকে ৬০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। আগেই কাজ সম্পন্ন হলেও ২০২১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়।

প্রসঙ্গত, আলিয়ার তালতলা ক্যাম্পাসের মূল গেটের বিপরীতে রয়েছে প্রিন্সিপ্যাল কোয়ার্টার, মাদ্রাসা বোর্ড। ব্রিটিশ শাসনকালে ক্যালকাটা জমিতে প্রিন্সিপ্যাল মাদ্রাসার কোয়ার্টার গড়ে তোলা হয়েছিল। পুরো বাড়িটায় থাকতেন ক্যালকাটা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। সংলগ্ন বাগান বাড়িও ছিল। মৌলানা আজাদ কলেজ যখন ১৯২৬ সালে স্থাপন করা হয়, তখন থেকে দোতলায় মৌলানা আজাদ কলেজের এবং একতলায় ক্যালকাটা মাদ্রাসার প্রিন্সিপ্যালের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়। পরে ওই বিল্ডিংয়ের নিচের তলায় ৭০ দশকের পর মাদ্রাসা বোর্ডে কার্যালয় হয়। জায়গা কম হওয়ার জন্য সরকারকে চিঠি লেখা হলে পাশে নতুন মাদ্রাসা বোর্ড তৈরি হয়। তবে এখন মাদ্রাসা পর্ষদ সল্টলেকে স্থানান্তর হলেও বোর্ডের রোকেয়া ভবনটি শিক্ষকদের ট্রেনিং সেন্টার এর জন্য সংস্কার কাজ চলছে।

মৌলানা আজাদ কলেজের হস্টেল সুপার এস এম হাসমি বলেন, এই কলেজের গালর্স হস্টেলে ছাত্রী ভর্তির আগে সংখ্যালঘুদের জন্য ভাবনা চিন্তা করা উচিত ছিল। এই নিয়ে এখন অনেকে প্রশ্ন তুলছেন। তবে সংখ্যালঘু ছাত্রীদের স্বার্থে রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানিকে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন পরীক্ষা নিয়ামক তানবির আহমেদ বলেন, দূরের ছাত্রীদের থাকার জন্য হস্টেল প্রয়োজন। মৌলানা আজাদ কলেজে মেয়েদের হস্টেল ছিল না। এখন মেরিট হিসেবে ভর্তি হবে। এতে সব সম্প্রদায়ের ছাত্রীরা সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি সংখ্যালঘু ছাত্রীদের জন্য যদি আলাদাভাবে সুযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় তার জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানান তিনি। কারণ সংখ্যালঘু মেয়েরা অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে রয়েছে। সৌজন্যে- পুবের কলম পত্রিকা

Related Articles

Back to top button
error: