ইউক্রেনে নিহত নবীনের দেহ চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্বার্থে হাসপাতালে দান করবে পরিবার

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: প্রায় তিন সপ্তাহের অপেক্ষার পর সোমবার ভোর রাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে নিহত ডাক্তারি পড়ুয়া নবীন শেখরাপ্পার দেহ দেশে ফিরে আসে। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় কর্ণাটকের হাভেরি জেলায় নবীনের পৈতৃক ভিটেতে। নবীনকে ফুলের মালা দিয়ে শেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্বাই। এদিন নবীনের মরদেহ হাতে পাওয়ার পর তার পরিবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, ডাক্তারি পড়ুয়া নবীনের দেহ তাঁরা কর্নাটকের এস এস হাসপাতালে রিসার্চের জন্য দান করবেন।

সোমবার বেলায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার পর নবীনের বাবা শেখর জ্ঞানগৌড়া জানান, নবীনের দেহ হাতে পাওয়ার পর তাঁরা অনেকটাই নিশ্চিন্ত বোধ করছেন। ছেলের দেহ বাড়িতে ফিরে এলে হিন্দু ধর্ম রীতি মেনে এবং তাঁদের পারিবারিক রীতিনীতি মেনে পুরোহিতের দেওয়া বিধান অনুযায়ী সমস্ত কাজ করা হবে। এরপরে নবীনের দেহ কিছুক্ষণ রেখে দেওয়া হবে সবাই যাতে এসে তাঁকে শেষবারের জন্য দেখে যেতে পারেন। এরপর গ্রামের মানুষেরা কিছু অনুষ্ঠান করবেন। সন্ধ্যার দিকে নবীনের দেহ এস এস হাসপাতালে রিসার্চের স্বার্থে দান করা হবে।

অন্যদিকে, মৃত্যুর প্রায় তিন সপ্তাহ পর মৃত ওই পড়ুয়ার দেহ রিসার্চের কাজে কতটা সহযোগী হয়ে উঠবে তা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করা হলে সংবাদমাধ্যমকে তাঁরা জানিয়েছেন, যেহেতু নবীনের মৃত্যু ইউক্রেনে হয়েছে, তাই ইতিমধ্যেই সেই দেশের প্রটোকল মেনে তাঁর ক্ষত পরিষ্কার করা হয়েছে এবং পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। ইউক্রেনের পাঠানো মেডিকেল রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসাবে লেখা রয়েছে ব্লাস্ট ইনজুরি। বর্তমানে নবীনের দেহ যথেষ্ট ভালো অবস্থায় রয়েছে। তাঁর দেহ যতটা সম্ভব চিকিৎসাবিজ্ঞানের রিসার্চের কাজে ব্যবহার করা হবে। নবীনের দেহ এখন যে অবস্থায় আছে তাতে আগামী এক থেকে দেড় বছর ওই দেহ ঘেঁটে পড়াশোনা করতে পারবেন মেডিকেলের ছাত্র-ছাত্রীরা। যাতে নবীনের দেহ সংরক্ষণ করা যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় কোনো কেমিক্যাল তাঁর শরীরে ইনজেক্ট করতে হবে কিনা তাও দেখা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ১ তারিখ যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে খাবারের জন্য মুদির দোকানের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন রাশিয়ান সেনার হামলার শিকার হন নবীন শেখরাপ্পা। খারকিভে একটি বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। ঘটনার দিন সকালে পরিবারের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার পর খাবারের জন্য মুদির দোকানে গিয়েছিলেন তিনি। সেইসময় রুশ যুধবিমান মিসাইল ছোঁড়ে ওই এলাকায়। মুহুর্তের মধ্যে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ২১ বছর বয়সী নবীন শেখরাপ্পার দেহ। খবর পেয়ে শোকে ভেঙে পড়ে পরিবার। তারপর থেকেই লাগাতার প্রচেষ্টা চালানো হয় মৃত ভারতীয় ডাক্তারি পড়ুয়া নবীনের দেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য।