HighlightNewsদেশ

ছাত্রীদের ‘হিজাব’ পরতে বাধ্য করায় অভিযুক্ত দামোহের স্কুলের স্বীকৃতি বাতিল করল মধ্যপ্রদেশ সরকার

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: সম্প্রতি ভিন্ন ধর্মের ছাত্রীদের হিজাব পড়তে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছিল মধ্যপ্রদেশের দামোহ জেলার ‘গঙ্গা যমুনা হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল’-এর বিরুদ্ধে। হিজাব সংক্রান্ত অভিযোগ ওঠার পরেই মধ্যপ্রদেশের শিক্ষামন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র জেলার শিক্ষা আধিকারিককে ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিষয়টি ‘সংবেদনশীল’ বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এবার, দামোহ জেলার সেই স্কুলের স্বীকৃতি বাতিল করার নির্দেশ দিল মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের সরকার। মধ্যপ্রদেশ শিক্ষা দফতরের তরফে শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দামোহর ‘গঙ্গা যমুনা হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল’-এর স্বীকৃতি বাতিল করার কথা জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে, অভিযোগের সত্যতা জানার জন্য দামোহর জেলাশাসক ময়াঙ্ক আগরওয়াল শনিবার তদন্ত কমিটি গড়ার কথা ঘোষণা করেছেন।

চলতি সপ্তাহেই ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ মুসলিম ছাত্রীদের পাশাপাশি, হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান-সহ অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ছাত্রীদের হিজাব পরে স্কুলে আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। মধ্যপ্রদেশের দামোহের গঙ্গা যমনা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়া হিন্দু মেয়েদের হিজাব পরিহিত ছবি সম্প্রতি স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। দশম শ্রেণীর ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পরে, স্কুল কর্তৃপক্ষ টপারদের ছবি প্রকাশ করে, যেখানে ১৮জন শিক্ষার্থীদের ছবি ছিল। এর মধ্যে ১৫জন মেয়ে রয়েছে, যাদের সবাইকে হিজাব পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়। এদের মধ্যে চারজন মেয়ে হিন্দু। ‘দামোহ স্টোরি’ নামে এই ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। কোনো এক জনৈক ব্যক্তি এই ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে পোস্ট করেন। সেখানে হিজাব ও ধর্ম নিয়ে নানা মন্তব্য করা হয়। এরপর, বিষয়টি পৌঁছয় জাতীয় শিশু অধিকার সংরক্ষণ কমিশনে। কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়াঙ্কা কানুনগো এই বিষয়ে একটি টুইট করেন। প্রশাসনও এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
এদিকে, স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের বক্তব্য, এই হেডস্কার্ফ (হিজাব) স্কুলের ড্রেস কোডের অংশ। এই বিষয়ে জানার পর, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান কালেক্টরকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

অন্যদিকে, ওই স্কুলে এবছর দশম শ্রেণীতে স্কুলে প্রথম হওয়া হিন্দু শিক্ষার্থীর দাবি, স্কুলে আল্লামা ইকবালের গান, ‘লব পে আতি হ্যায় দুয়া বনকর তমন্না মেরি, জিন্দেগি হো শমা কি সুরত খুদায়া মেরি’ গাওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হতেই প্রতিবাদ শুরু করেছে হিন্দু সংগঠনগুলি। বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি বাতিলের পাশাপাশি, এই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্রও দামোহের এসপিকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে, এটিকে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের পরিচালক। তিনি বলেন, এই প্রার্থনা সঙ্গীত শিশুদের জন্য। মেয়েটির পরিবারের সদস্যরাও জানেন না যে জাতীয় সঙ্গীত ছাড়াও স্কুলে প্রার্থনা হিসেবে আল্লামা ইকবালের গানও গাওয়া হয়। একইসঙ্গে, স্কুলে সবকিছু ঠিক আছে বলেও দাবি করেন কালেক্টর মায়াঙ্ক আগরওয়াল।

Related Articles

Back to top button
error: