HighlightNewsদেশ

জ্ঞানভাপি মসজিদে পাওয়া বস্তু ‘শিবলিঙ্গ’ নয় বরং অজুর পানির ফোয়ারা দাবি মসজিদ কমিটির

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: বারাণসী একটি আদালত সোমবার উত্তরপ্রদেশ সরকারকে ‘কাশী বিশ্বনাথ মন্দির’ সংলগ্ন জ্ঞানভাপি মসজিদের প্রাঙ্গনে একটি ছোট পুকুরের চারপাশের এলাকাটি সিল করতে বলেছে। জলাশয়ে একটি শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ। এই মামলার হিন্দু পক্ষের একজন আইনজীবী সাংবাদিকদের বলে ছিলেন যে, ‘কথিত আবিষ্কারটি প্রমাণ করে যে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব মূল কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরটি ভেঙে দিয়েছিলেন যাতে মসজিদটি তৈরি করা হয়েছিল। এই দাবি আদতে মসজিদ বিষয়ে সংঘ পরিবারের প্রচারণাকে সমর্থন করে। যদিও জ্ঞানভাপি মসজিদে পাওয়া বস্তুটি ‘শিবলিঙ্গ’ নয় বরং অজুর জন্য যে পানি আসে সেই পানির ফোয়ারা বলে দাবি করেছে মসজিদ কমিটি।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির আইনজীবীরা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যে বস্তুটি পাওয়া গিয়েছে সেটি শিবলিঙ্গ নাও হতে পারে। পাশাপ্সহি তিনি হিন্দু পক্ষকে তদন্তের বিষয়ে কথা না বলার বিষয়ে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার জন্য অভিযুক্ত করেছে এবং তারা সোমবার উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। এদিকে মঙ্গলবার, সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদনের শুনানি হবে যেটি মসজিদ কমিটি কয়েকদিন আগে দাখিল করেছিল যে এই মসজিদ নিয়ে নতুন কোনো কার্যক্রম (যেমন একটি জরিপ) বন্ধ করার জন্য।

সোমবারের দেওয়ানী আদালতের বিচারপতি রবি কুমার দিবাকরের আদেশে বলা হয়েছে, “বারাণসীর জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অবিলম্বে শিবলিঙ্গ পাওয়া গিয়েছে এমন এলাকাটি সিল করার এবং সিল করা এলাকায় কোনও ব্যক্তির প্রবেশে বাধা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ বারাণসীর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, বারাণসীর কমিশনার এবং সিআরপিএফ-এর কমান্ড্যান্টকে সিল করা এলাকা সংরক্ষণ ও সুরক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” সিভিল কোর্ট শ্রিংগার গৌরীতে প্রতিদিন প্রার্থনা করার অধিকার চেয়ে হিন্দুদের একটি গ্রুপের একটি পিটিশনের (সিনিয়র ডিভিশন) নিয়ে কাজ করছে। একটি কাঠামো যা কথিত হিন্দু দেবতা ও দেবীর প্রাঙ্গনে খোদাই করা হয়েছে। বিচারক দিবাকর গত মাসে ১৮ জন হিন্দু এবং ১৮ জন মুসলিম সদস্যদের নিয়ে একটি কমিশন গঠন করেছিলেন এবং মসজিদ প্রাঙ্গণটি জরিপ ও ভিডিওগ্রাফ করতে বলেছিলেন। পিটিশনের আইনজীবী হরি শঙ্কর জাইনের মন্তব্য থেকে সোমবার জানা গিয়েছে যে, হিন্দু পক্ষ এখন মামলার পরিধি বাড়ানোর চেষ্টা করবে। তারা এখন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ মসজিদের চারপাশে এবং নীচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কিনা সেটা দেখার জন্য সার্ভে করার আবেদন করবে।

কথিত মন্দির ধ্বংস সংক্রান্ত মামলা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এলাহাবাদ হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের আদেশ স্থগিত করেছে যেখানে বলা হয়ে ছিল ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ যাতে মসজিদটি ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরের উপর দাঁড়িয়ে আছে কিনা তা রাডার প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য বলা হয়েছিল। সঙ্ঘ পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে জোর দিয়েছিলেন যে, যে অযোধ্যায় একটি রাম মন্দির তৈরির পরে তাদের পরবর্তী লক্ষ্য বারাণসী এবং মথুরা যেখানে তাদের অভিযোগ অনুযায়ী মসজিদ নির্মাণের জন্য একটি কৃষ্ণ মন্দির ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।

শনিবার সকাল থেকে সোমবার সকালের মধ্যে আদালত-নিযুক্ত কমিশনের বিতর্কিত এবং স্টপ-স্টার্ট জরিপের শেষ রাউন্ডের সময় কথিত শিবলিঙ্গটি পাওয়া গেছে। যদিও বিচারক দিবাকর উভয় পক্ষকে তদন্তের বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ না করার জন্য কমিশনকে মঙ্গলবার একটি সিল করা খামে তার প্রতিবেদন দেওয়ার আগে বলেছিলেন। জৈন সোমবার সকালে কথিত শিবলিঙ্গের আবিষ্কার প্রকাশ করেছিলেন। বিকেলে, জৈন সাংবাদিকদের বলেছিলেন: “একটি পুকুরে ১২.৮ ফুট উঁচু শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে, যা আগে ছিল। মুসলমানদের দ্বারা উযুর জন্য ব্যবহার করা হয় (নামাজের আগে নিজেকে শুদ্ধ করার জন্য একটি শারীরিক ও আধ্যাত্মিক কাজ)। তাই এলাকাটি সিল করার জন্য আদালতের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে৷” তিনি বলেছিলেন যে, ‘কথিত শিবলিঙ্গটি পুকুরের নীচে আংশিকভাবে সমাহিত করা হয়েছিল৷’ সূত্র জানায়, পুকুরটি শ্রিংগার গৌরীর কাছাকাছি ছিল। মসজিদ পরিচালনা কমিটির কৌঁসুলি অভয় নাথ যাদব বলেছেন, “এমন কিছু প্রমাণিত হয়নি যে এটি মন্দির নির্মাণের জন্য ভেঙে ফেলা হয়েছিল।’

Related Articles

Back to top button
error: