ইসলাম ও নবীকে অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে আইন হোক, দাবি মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের
টিডিএন বাংলা ডেস্ক : নবী মুহাম্মদ সা. এবং ইসলামকে অবমাননাকারী ও বিদ্বেষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড সরকারকে এই সমস্যাটি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার জন্য ব্লাসফেমির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী আইন প্রণয়ন করতে বলেছে। প্রথমবারের মতো ল-বোর্ড মুসলিম সম্প্রদায়কে উত্তরাধিকার, পিতামাতার সম্পত্তিতে নারীদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে বলেছে। এটি মুসলিমদেরকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তির স্বার্থে আন্তঃধর্মীয় বিয়ে এড়াতেও বলেছে। মুসলিমরা যেভাবে লিঞ্চিংয়ের শিকার হচ্ছে তার বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়েছে তারা৷ উত্তরপ্রদেশের কানপুরে অনুষ্ঠিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত একগুচ্ছ প্রস্তাবে বোর্ড এই দাবি জানায়।
ভারতে হিন্দু, শিখ এবং অন্যান্য অ-মুসলিম পণ্ডিতরা সর্বদা মহানবী মুহাম্মদ সা.-কে সম্মান করে বলে উল্লেখ করে বোর্ড উল্লেখ করেছে যে ইসলামের শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মুসলমানরা কখনই অন্য ধর্মের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে কোনও আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করেনি। যাইহোক, হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু তথাকথিত ধর্মীয় নেতা, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মীরা ব্যক্তিগত ও প্রকাশ্য মঞ্চে এমনকি প্রেস কনফারেন্সেও নবী ও ইসলামের বিরুদ্ধে অত্যন্ত আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করছেন। বোর্ড তার রেজুলেশনে বলেছে, সাম্প্রদায়িক শক্তির এই মনোভাব অগ্রহণযোগ্য। এটি দেশে বিভেদ সৃষ্টি করছে৷ জাতীয়তাবাদ এবং দেশপ্রেমের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে তারা৷
বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা নবী মুহাম্মদ সা.কে অন্য যে কোনও ব্যক্তিত্বের চেয়ে বেশি ভালোবাসে ও শ্রদ্ধা করে৷ বোর্ড উল্লেখ করেছে যে নবীকে অবমাননা সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এটি সারা বিশ্বে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে৷ কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারগুলি এই ধরনের সাম্প্রদায়িক এবং ঘৃণা-বিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে কোনও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়েও বোর্ড উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দেশে অভিন্ন দেওয়ানি আইন গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড৷ রেজোলিউশনে বলা হয়েছে, ধর্মীয় পাঠ্য ও আইনের যে কোনও স্বেচ্ছাচারী ব্যাখ্যা নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারকে লঙ্ঘন করে৷ তাই আদালত যেন না জেনে এমন কোনও ব্যাখ্যা না করে৷
মুসলমানদেরকে তাদের ব্যক্তিগত ও যৌথ জীবনে শরীয়াহ অনুসরণ করতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছে বোর্ড৷ আন্তঃধর্মীয় বিবাহ এড়িয়ে চলতেও পরামর্শ দিয়েছে তারা৷ কারণ এটি সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষতি করছে। ধর্মান্তর করার অজুহাতে ইসলাম ধর্ম প্রচারকদের গ্রেফতারের সমালোচনা করেছে ল বোর্ড৷ জোরপূর্বক হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করার অজুহাতে দিল্লি থেকে উমর গৌতম এবং গুজরাতে সালাহউদ্দিন শেখের মতো কয়েকজন মুসলমানের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা করেছে বোর্ড৷
সংবাদ সূত্র- পুবের কলম