টিডিএন বাংলা ডেস্ক: ভারত পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সমন্বিত করে যদি একটি দেশ গঠন করতে চায় বিজেপি তাহলে বিজেপির এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাবে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি তথা এনসিপি। মুম্বাইয়ের ‘করাচি সুইটস’ প্রসঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের একটি মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এমনটাই জানালেন মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রী ও এনসিপি নেতা নবাব মালিক।
মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের একটি সাম্প্রতিক মন্তব্য প্রসঙ্গে শিবসেনা-এমসিপি-কংগ্রেস জোট সরকারের মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা নবাব মালিক বলেন,”দেবেন্দ্র ফড়নবিশ যেভাবে বলেছেন যে এমন সময় আসবে যখন করাচি ভারতের অংশ হয়ে যাবে। তখন আমরাও বলছি যে ভারত পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে একীভূত করা উচিত।বার্লিনের প্রাচীর যদি ভেঙে ফেলা যায় তবে ভারত পাকিস্তান ও বাংলাদেশে একসাথে আসতে পারে না কেন?”
এ প্রসঙ্গে বিজেপিকে সমর্থনের বার্তা দিয়ে তিনি আরো বলেন,”বিজেপি যদি এই তিনটি দেশকে সংযুক্ত করে একটি দেশ করতে চায়, তবে আমরা অবশ্যই তাকে স্বাগত জানাবো।”
প্রসঙ্গত, মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় একটি মিষ্টির দোকানের নাম করাচি সুইট হওয়ায় এক শিবসেনা নেতার এতটাই আপত্তিকর মনে হয় যে তিনি সরাসরি দোকানের মালিককে এই নাম পরিবর্তন করে অন্য কিছুর রাখতে বলেন। নীতিন মধুকর নন্দগাঁওকার নামে ওই নেতা স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই নাম পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় তিনি এই নাম একেবারেই পছন্দ করেন না। এই ঘটনার একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে বান্দ্রা ওয়েস্টের ঐ মিষ্টির দোকানে ওই শিবসেনা নেতা দোকানের মালিককে বলছেন যে এই নামটি তিনি ঘৃণা করেন কারণ এই নাম পাকিস্তান এবং সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই এই নাম বদলে দোকানের মালিক যেন কোন মারাঠি নাম রাখেন।
দোকানের মালিককে শিবসেনা নেতা নন্দগাঁওকারকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তাঁর পূর্বপুরুষরা এই নামকরণ করেছিলেন কারণ তাঁরা করাচি থেকে দেশভাগের পরে এসেছিলেন। এমনকি ওই দোকানের মালিক একথাও বলেন যে আজ এই দোকানের সাথে বাই দোকানের নামের সাথে করাচির কোন যোগাযোগ নেই। যদিও দোকানের মালিকের এই যুক্তি কোনভাবেই মানতে রাজি হন না ওই শিবসেনা নেতা। পাল্টা দোকানের মালিককে তিনি বলেন, তিনি চাইলে যা ইচ্ছে দোকানের নাম রাখতে পারেন, চাইলে নিজের পূর্বপুরুষদের নাম রাখতে পারেন কিন্তু করাচি নাম বিলকুল যেন না রাখেন কারণ এইনাম সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে যুক্ত। শুধু তাই নয় তিনি দোকানের মালিককে বলেন,”আমি আপনাকে নাম দিচ্ছি, আপনাকে দোকানের নাম বদলাতেই হবে কারণ এটি পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত। এই নাম করাচি থেকে বদলে কোন মারাঠি নামের সাথে পরিবর্তন করুন।”
ওই ভিডিওর শেষে দেখা গেছেশেষ পর্যন্ত ওই শিবসেনা নেতা দোকানের মালিককে এই নাম পরিবর্তনের জন্য যাবতীয় সহায়তা করার কথাও বলেছেন কিন্তু তাঁর শর্ত একটাই এই নাম পরিবর্তন করতেই হবে এবং সেই পরিবর্তন শুধুমাত্র দোকানের গায়ে নয় সরকারি খাতাতেও হতে হবে।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে শিবসেনা। তড়িঘড়ি এই ঘটনার সঙ্গে শিবসেনার কোনরকম যোগাযোগ নেই বলে টুইট করে জানান শিব সেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। একটি টুইট করে তিনি লেখেন,”করাচি বেকারি এবং করচি সুইটস গত ৬০ বছর ধরে মুম্বাইয়ে রয়েছে। তাদের পাকিস্তানের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। এখন তাদের নাম পরিবর্তন করতে বলার মধ্যে কোন অর্থপূর্ণ কারণ নেই। তাদের নাম পরিবর্তন করার দাবি শিবসেনার সরকারি অবস্থান নয়।”
এরপর, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বলেন,”আমরা সম্পূর্ণভাবে ‘অখন্ড ভারতে’ বিশ্বাস করি। আমরা মনে করি যে করাচি ও একদিন ভারতের অংশ হয়ে উঠবে।”
দেবেন্দ্র ফড়নবিশের এই মন্তব্যের পাল্টা জবাবে, ‘করাচি’ দখলের আগে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ছিনিয়ে আনার পরামর্শ দিয়ে শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেন,”সবার আগে পাকিস্তানের দখল করে রাখা কাশ্মীর অংশ ফেরান, পরে আমরা করাচি যাব!”সঞ্জয় রাউত এর এই মন্তব্যের পর এই মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রী ও এনসিপি নেতা নবাব মালিকেরপাকিস্তান বাংলাদেশ এবং ভারতকে একত্রীকরণ করার ক্ষেত্রে বিজেপির পদক্ষেপকে স্বাগত জানানোর এই মন্তব্য সামনে আসে।