টিডিএন বাংলা ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের হাথরাসের নির্যাতিতার শবদেহ তড়িঘড়ি অন্তিম সৎকার করে দেওয়ার পর এবার ছাইচাপা দিতে ব্যস্ত হয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে গোটা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক নেতারা তো বটেই সাংবাদিকদেরও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না ভেতরে। তৈরি করা হয়েছে এক অভেদ্য দুর্গ।যা ভেদ করে না তো ভেতর থেকে কেউ বাইরে আসতে পারবে নাই বাইরে থেকে কেউ ভেতরে যেতে পারবে। এরইমধ্যে নির্যাতিতার এক ভাই কোনরকমে ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে লুকিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে যায়। সাংবাদিকদের দেওয়া বয়ানে জানায়, পুলিশ তাদের ওপর তদন্তের নামে আদতে কি অত্যাচার চালাচ্ছে। নির্যাতিতার ওই ভাইয়ের অভিযোগ, পুলিশ তাদের মারধর করেছে, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে। এমনকি খোদ ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট তার জেঠুর বুকে লাথি মেরেছে। যার জেরে তার জেঠু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কোন উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত তার মায়ের কথায় সংবাদমাধ্যমকে ডাকতে এসেছে সে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এই ফুটেজ তুলে ধরে এবার উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে সত্যকে লুকানোর জন্য বর্বরতার পথে নামার অভিযোগ করেছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।
একটি টুইট করে রাহুল গান্ধী লিখেছেন,”উত্তর প্রদেশ প্রশাসন সত্যকে লুকানোর প্রচেষ্টায় বর্বরতার পথে নেমেছে। না তো আমাদের, নাই মিডিয়াকে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হচ্ছে এবং না তো ওদের (নির্যাতিতার পরিবারকে) বাইরে আসতে দিচ্ছে, উপরন্তু পরিবারের লোকেদের উপর মারধর এবং বর্বরতা করছে। কোন ভারতীয় এ ধরনের ব্যবহারকে সমর্থন করতে পারে না।”
এদিকে লাগাতার ‘এবিপি নিউজ’ -এর সাংবাদিকদের প্রশ্নের চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে, নির্যাতিতার বাড়ির ভেতরে তদন্ত চলছে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমের অর্থাৎ এসআইটির। যতক্ষণ তদন্ত চলবে ততক্ষণ পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের কোন প্রতিনিধিকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এমনটাই তাদেরকে ওপর থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কারণ সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা ভেতরে গেলে তদন্তের কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
এদিকে, উত্তর প্রদেশে পুলিশের তথাকথিত এই তদন্তের মাঝেই নির্যাতিতার ভাইয়ের বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে সংবাদমাধ্যমের কাছে দেওয়া ওই বয়ান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে তাহলে আদতে কি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে? কারণ এর আগে উত্তর প্রদেশে পুলিশের এডিজি বলেছিলেন যে, নির্যাতিতার সঙ্গে ধর্ষণ হয়নি। ফরেনসিক রিপোর্টে নির্যাতিতার শরীরের থেকে নেওয়া স্যাম্পল থেকে কোন শুক্রাণুর হদিস পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর কারণ ঘাড়ের হাড় ভেঙে যাওয়া। তাহলে কি নিয়ে তদন্ত করছে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম? নাকি পরিবারের অভিযোগ সত্যি? তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বয়ান বদলাবার জন্য? যদিও সংবাদমাধ্যমের এ ধরনের কোনো প্রশ্নেরই সদুত্তর দেননি ব্যারিকেড করে রাখা পুলিশ আধিকারিকরা।