টিডিএন বাংলা ডেস্ক : এবার হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ালো রাজধানী নয়াদিল্লির জাহাঙ্গিরপুরী এলাকায়। শনিবার হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত শোভা যাত্রা বেরনোর পরেই উত্তর-পশ্চিম দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীতে দুই গোষ্ঠীর সহিংসতার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল এলাকা। খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। দুই গোষ্ঠীর তুমুল সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৬জন পুলিশকর্মী সহ দুপক্ষের বেশ কয়েকজন। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে আহতদের মধ্যে কারও অবস্থাই আশঙ্কা জনক নয়। তারা প্রত্যেকেই এখন ভালো আছেন বলে খবর।
যদিও শনিবার হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে হওয়া সংঘর্ষে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
ইতিমধ্যেই ঘটনার খবর পৌঁছায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে। তড়িঘড়ি দিল্লি পুলিশকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। শনিবার এই সংঘর্ষ শুরুর পরেই দিল্লির সব এলাকার পুলিশের শীর্ষকর্তাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন খোদ পুলিশ কমিশনার। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ঘটনার ভিডিওতে দেখা গিয়েছে রাস্তার দু’পাশে দুই পক্ষ পরস্পরের দিকে পাথর ছুড়ছে। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় পাথর ছোঁড়া হয়েছে এবং গভীর রাত পর্যন্ত পরিস্থিতি যথেষ্ট উত্তেজনাপূর্ণ ছিল।
ঘটনার কথা জানতে পেরে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সংবাদমাধ্যমে বলেন,”আমি সবাইকে শান্তি রক্ষার আবেদন জানাচ্ছি। কারণ শান্তি ও সম্প্রীতি ছাড়া দেশ এগিয়ে যেতে পারে না।” পাশাপাশি তিনি শান্তি বজায় রাখতে না পারায় কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন,
“দেশের রাজধানীতে শান্তি রক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। তাঁদের উচিত মানুষের কাছে শান্তি রক্ষার আবেদন জানানো।”
এই ঘটনায় জনতাকে শান্তি রক্ষার আবেদন জানিয়ে দিল্লির পুলিশ কমিশনার টুইটারে লেখেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জাহাঙ্গিরপুরী ও অন্যান্য স্পর্শকাতর এলাকায় পর্যাপ্ত অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের গ্রাউন্ডে থাকতে বলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে নিবিড়ভাবে নজর রাখতে বলা হয়েছে। দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব এবং ভুয়া খবরে কান না দেওয়ার জন্য নাগরিকদের অনুরোধ করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, এদিনই দেশে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনার নিন্দা করে বিবৃতি জারি করেছে বিরোধী শিবির। দেশে সাম্প্রদায়িক হিংসা ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। এম কে স্ট্যালিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে সনিয়া গান্ধির মত নেতারা দেশের শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং ঘৃণার ভাষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমস্ত বিরোধী দলকে এক হয়ে লড়াইয়ের ডাক দেওয়া হয়েছে বিরোধী শিবির এর তরফে।
প্রসঙ্গত, ২০২০-এর ফেব্রুয়ারির উত্তর-পূর্ব দিল্লি দাঙ্গার পর এটিই রাজধানীতে প্রথম বড় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। ২০২০-এর দাঙ্গায় দিল্লিতে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বহু মানুষ আহতও হয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন অগনিত মানুষ। যার দগদগে ক্ষত এখনও জ্বল জ্বল করছে আমজনতার মনে।