টিডিএন বাংলা ডেস্ক : ত্রিপুরায় হিংসার পরিস্থিতি নিয়ে খবর করা এক সাংবাদিক ও অনুসন্ধানি রিপোর্ট তৈরি করা দুই জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে ইউএপিএ (UAPA) ধারায় মামলা করে ত্রিপুরা সরকার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলায় ধাক্কা খেল ত্রিপুরা সরকার। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত অভিযুক্ত দুই আইনজীবী ও এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না ইউএপিএ (UAPA) ধারায় এমনই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট ত্রিপুরা পুলিশ ও প্রশাসনকে।
গত মাসে ত্রিপুরায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজক পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই সময়ে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে হওয়া নানা ধরনের পোস্ট ও প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে মামলা দায়ের করে ত্রিপুরা পুলিশ (Tripura Police)। এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন করার জন্য সাংবাদিক শ্যাম মীরা সিংয়ের বিরুদ্ধে মামলায় করা হয়। একইভাবে মামলা করা হয় সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী মুকেশ এবং আনসার ইনদোরি। এই দুই আইনজীবী মানবাধিকার রক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত। ঘটনার সত্য অনুসন্ধান করতে তাঁরা ত্রিপুরা গিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই দু’জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে মামলা করা হয়।
পুলিশের এফআইআরের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন অভিযুক্ত সাংবাদিক এবং আইনজীবীরা। মামলা যায় সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি এনভি রামান্না, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি সূর্য কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, আবেদনে আইনজীবীর মাধ্যমে সাংবাদিক আদালতে বলেন, “এভাবে রাষ্ট্র সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে না। এই আইনে অভিযুক্ত হওয়াটাই একটা শাস্তি। চিন্তায় খেতে, ঘুমোতে পারছি না। আজ আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, কাল অন্য কারও বিরুদ্ধে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই সত্যকে আড়াল করতে ইউএপিএ আইনকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করা হয়। আমার লড়াই এই আইনেরই বিরুদ্ধে।” জানা গিয়েছে দুই আইনজীবীর আবেদনে বলা হয়েছে, “সংখ্যালঘুদের উপর হওয়া বিভিন্ন নির্যাতনের প্রসঙ্গে অনুসন্ধান করে আমরা একটি বাস্তবসম্মত, সত্যি রিপোর্ট তৈরি করেছি। যাতে আপত্তিকর কিছুই নেই। শুধু রিপোর্ট তৈরি করার কারণেই আমাদের বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) করা হল। যার জন্য খুবই চিন্তায়, উদ্বেগে দিন কাটছে। সুপ্রিম কোর্টের থেকে ন্যায়বিচার পাব, এমনটাই আশা করি আমরা।” তাঁদের আরও বক্তব্য, “রাষ্ট্র যেভাবে ইউএপিএ আইন ব্যবহার করে, তাতে শুধু তারা যা চায়, সেইটুকুই সামনে আসে, বাকিটা নয়।”