টিডিএন বাংলা ডেস্ক: আজ তুরস্কে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে দ্বিতীয় দফার ঐতিহাসিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আজকের এই ভোট সম্ভবত তুরস্কের ইতিহাসের সবচেয়ে চর্চিত ও উত্তেজনাপূর্ণ। রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান প্রথম দফার নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী দলের নেতা কেমাল কিলিচদারওলুর থেকে বেশি ভোট পেলেও ৫০% ভোট না পাওয়ায় ক্ষমতায় আসতে পারননি। এরপর তুরস্কের নির্বাচনী নিয়ম অনুযায়ী আজ ২৮ মে আবারও শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন। এই নির্বাচনের ফলাফল দেশটির অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক অঙ্গন উভয় ক্ষেত্রেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
এবারের নির্বাচনে আর এক বিরোধী দলীয় নেতা সিনান ওগান প্রতিদ্বন্দ্বীতা না করলেও এই ভোটে তার ও তার দলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যদিও ১৪ মে প্রথম দফা ভোটের আগে সিনান ওগান তেমন পরিচিত মুখ ছিলেন না। তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন এটিএ অ্যালায়েন্সের সমর্থনে। এই জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে ডানপন্থী নেতা উমিত ওজদাগের দল ভিক্টরি পার্টি। প্রথম দফায় জাতীয়তাবাদী ঘরানার সিনান ওগান পেয়েছিলেন ৫ দশমিক ২ শতাংশ ভোট। বেশি ভোট পাওয়ার দিক দিয়ে তিনি ছিলেন তৃতীয়। এবারের নির্বাচনে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে সমর্থন করছেন সিনান ওগান। যদিও ওগানের ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন ওজদাগ। তিনি বলেন, ওগান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটা তাঁর নিজস্ব। এর দুই দিন পরে কেমাল কিলিচদারওলুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন ওজদাগ। তাঁরা একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। ওই সমঝোতা স্মারকে তাঁরা শরণার্থীদের তুরস্ক থেকে প্রত্যাবর্তন করা এবং দুর্নীতি, পরিবারতন্ত্র ও সন্ত্রাসবাদ রুখে দেওয়ার মতো নানা বিষয়ে একমত হন। ফলে সিনানের সমর্থন পেলেও তার জোট বিরোধী জোটের পক্ষ নেওয়ায় এরদোগানের জন্য এই নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মনে করা হচ্ছে সিনান ওগানের সমর্থকেরা তিন ভাগে ভাগ হয়ে যেতে পারেন। তাঁদের একাংশ হয়তো ভোট দেবেন এরদোয়ানকে। আরেকাংশের ভোট যাবে কিলিচদারওলুর পক্ষে। আর কিছু সমর্থক ভোট দিতেই যাবেন না। কারণ তারা ভোট দিয়েছিলেন এরদোয়ান ও কিলিচদারওলুর বিকল্প কাউকে না পেয়ে।
তবে পরিসংখ্যান যাই বলুক না কেন এবারের নির্বাচনে এরদোগানের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ প্রথমত, তিনি প্রথম দফার নির্বাচনে সর্বাধিক সংখ্যক ভোট পড়েছেন তাই তার দিকেই দেশের জনগণ ঝুঁকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, সমস্ত বিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করেও প্রথম দফার নির্বাচনে কিলিচদারওলু জিততে না পাড়ায় তাদের মনোবল ভেঙে গিয়েছে। তবে শেষ হাঁসি কে হাঁসতে চলেছে সেটা জানতে আমাদের আরও কিছুক্ষণ ধৈর্য্য ধরতে হবে।