হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তাল কানপুর, চলল গুলি, ছোঁড়া হল পাথর, গ্রেফতার ১৮

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: শুক্রবার কানপুরে নামাজ শেষের পরে শুরু হয় গোষ্ঠী সংঘর্ষ। জানা গিয়েছে, বিজেপির মুখপাত্র নুপুর শর্মার পয়গম্বর মহম্মদের বিষয়ে একটি টিভি শোতে করা বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বেঁধে যায় গোষ্ঠী সংঘর্ষ। উত্তাল হয়ে ওঠে উত্তরপ্রদেশের কানপুর। দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় হাতাহাতি, পাথর ছোঁড়া ছুঁড়ি, ভাঙ্গা হয় বেশ কয়েকটি দোকান, চলে গুলি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় আধাসেনা নামাতে হয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। মামলা করা হয়েছে হাজারের বেশি মানুষের বিরুদ্ধে।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত মোট ৭জন আহত হয়েছেন যাদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মী রয়েছেন। জানা গিয়েছে, বিজেপি নেত্রীর পয়গম্বর মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন। নমাজের পর বাজার বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন। এরপরই দুই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। জানা গিয়েছে, এই সংঘর্ষের পেছনে আরেকটি কারণ হল বেশিরভাগ মসজিদে শুক্রবারের নামাজের সময় বলা হয়েছিল যে তাঁরা নবীকে নিয়ে কোনো রকম মন্তব্য সহ্য করবেন না। অভিযোগ নামাজের পরে একসঙ্গে মুসলিম সংগঠনগুলি বাজার বন্ধের ডাক দেয়। তবে কোনো এলাকাতেই নামাজের পরে বিক্ষোভ প্রদর্শনের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এরপরে রাস্তায় নামে মানুষ। শুরু হয় সংঘর্ষ।
কানপুরে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে জারি থাকে এই সংঘর্ষের পরিস্থিতি। সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুলিশের দাবি, ওই এলাকায় সরু রাস্তা দিয়ে ঢুকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা নিতে পারছিলেন না পুলিশকর্মীরা। তবে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষের পর এই ঘটনায় ১৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
এই ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ রেহাই পাবে না। শুক্রবার গভীররাতে উত্তরপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের কর্মকর্তারা। জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছেন, দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে গ্যাংস্টার আইন লাগু করা হবে এবং সম্পত্তি চিহ্নিত করে বুলডোজার চালানো হবে।
জানা গিয়েছে, নামাজের পর ইয়াতিমখানার বাজারে আসেন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন। তাঁরা ওই এলাকার দোকানপাট বন্ধ করার জন্য বলতে থাকলে অন্যান্য ধর্মের লোকেরা দোকান বন্ধ করতে অস্বীকার করেন। অভিযোগ নামাজিদের মধ্যেই কিছু বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী ছিল যারা দেশি পিস্তল ব্যবহার করে গুলি চালায় এবং পাথর নিক্ষেপ করা শুরু করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান পুলিশ কমিশনার বিজয় সিং মিনা এবং যুগ্ম কমিশনার আনন্দ তিওয়ারি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শুরু হয় লাঠিচার্জ। কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোঁড়ে পুলিশ। এরপরেও খেপে খেপে পাথর ছুঁড়তে থাকে বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসলেও এখনো পর্যন্ত ওই এলাকা উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।