টিডিএন বাংলা ডেস্কঃ দু’দিন আগেই উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকায় ৪০ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এবার মহিলা ভোট টানতে উচ্চমাধ্যমিক বা দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রীদের স্মার্টফোন এবং স্নাতক তরুণীদের ইলেকট্রনিক স্কুটি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি।
বছর ঘুরতেই ভোট রয়েছে পাঁচ রাজ্যে। এদিকে অনান্য রাজ্যের তুলনায় এবারে যেন যোগী গড়ে পালাবদল আনতে বেশি মনোনিবেশ করেছে কংগ্রেস শিবির। এমনকী প্রচারেও উত্তরপ্রদেশে বারেবারেই ঝড় তুলছে কংগ্রেস। সম্প্রতি প্রচারে বেরিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী দাবি করেন কংগ্রেস যদি উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় আসে তাহলে রাজ্যের সমস্ত মেয়েদের স্মার্টফোন ও ইলেকট্রিক স্কুটার দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা একটি টুইটে হিন্দিতে লেখেন, ‘গতকাল আমি কিছু ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। তারা জানিয়েছে, পড়াশোনা আর নিরাপত্তার প্রয়োজনে তাদের স্মার্টফোন দরকার। আমি খুশি যে আজ ইস্তাহার কমিটির সম্মতিতে উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে ইন্টার পাস করা মেয়েদের স্মার্টফোন এবং স্নাতক তরুণীদের ইলেকট্রনিক স্কুটি দেওয়া হবে।’
লক্ষ্য মহিলা ভোট, পশ্চিমবঙ্গের কায়দাতেই হাঁটছে কংগ্রেস। তাই যোগী রাজ্যে মহিলা ভোটারদের টার্গেট করেই এখন থেকেই ভোটের প্রচারে রাস্তায় কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধি। উত্তরপ্রদেশে আপাতত একক ভাবেই লড়ছে কংগ্রেস। যার পুরো দায়িত্বে রয়েছেন সোনিয়া তনয়া। আর যোগী রাজ্যের ব্যর্থতা তুলে ধরতে, কৃষক আন্দোলন ও কংগ্রেসের সংগঠনে দিনরাত এক করে দিচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা। কিছুদিন আগেই মহিলা ভোটারদের কাছে টানতে বিশেষ ঘোষণা করেন প্রিয়াঙ্কা। আর বৃহস্পতিবার ফের নতুন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী।
বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠনের পর নারী উন্নয়নে অনেকগুলি পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে কন্যাশ্রী অন্যতম। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে তৃণমূল। মহিলা সদস্যদের নামে পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হয়েছে। এছাড়া স্কুল বন্ধ থাকার সময় অনলাইনে পড়াশোনার সুবিধার জন্য দ্বাদশের ছাত্রছাত্রীদের স্মার্টফোন বা ট্যাব কিনতে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। মমতার সামাজিক কল্যাণ প্রকল্পগুলিকে ‘অনুকরণ’ করেই কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে চাইছে বলেই রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি।
জাতপাতের রসায়নের পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে মহিলা ভোটও যে বড় ফ্যাক্টর হতে চলেছে তা সকলেই বুঝে গিয়েছে। তাই মহিলা ভোটারদের মন জয় করতে কোনও কসরতই ছাড়ছে না শাসক-বিরোধী কোনও দলই। ৪০৩ আসনের উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৪২%। সেদিক থেকে মহিলা ভোট উত্তরপ্রদেশের ক্ষেত্রে নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠবে। আর এই দিকটা লক্ষ্য রেখেই একতরফা মহিলা ভোট থাবা বসাতে ঝাঁপিয়েছে কংগ্রেস, পর্যবেক্ষকদের একাংশ এমনটাই মনে করছেন।
শুধু বিধানসভায় জয়ই নয়, দিল্লি দখলের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উত্তরপ্রদেশ। রাজনৈতিক কারবারীদের একাংশের মতে, ২০২২ কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশে সরকার গড়তে সক্ষম হলে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কয়েককদম এগিয়ে যাবে হাত শিবির।